নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিগত তিনটি নির্বাচন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তৈমূর বসে পড়ার পর উপরের নির্দেশে শামীম ওসমান নিজেও নির্বাচন ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এই নেতা।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউজে আগামী ৪ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
এসময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভিকে পাঠানো একটি মেসেজের অংশ বিশেষ পড়ে শোনান শামীম ওসমান। তিনি বলেন, আমার বাবা মা ভাইয়্যার কবরগুলো শ্মশানের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার বিষয়ে, আমি প্রকাশ্যে মিডিয়ায় বলেছি। তুমি হয়ত জানো না, সেখানে আমি তোমাকে দায়ী করিনি। আমি আশা করেছিলাম এ ব্যাপারে তুমি তদন্ত কমিটি করে দোষীদের বিচার করবে। যাই হোক, আল্লাহ বিচার করবে। আমি তোমাকে কয়েকটি বিষয়ে কিছু কথা বলব। প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি আপার নির্দেশমত নির্বাচন করেছি। নির্বাচনের দিন আমার চোখের সামনেই যা ঘটার ঘটেছিল। তখন তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু ছিল। আমাকে বলা হয়েছিল তৈমূর বসে গেলে তোমাকেও সরে যেতে হবে, নির্বাচন ছেড়ে দিতে হবে। আমি কথা রেখেছিলাম। নির্বাচনের পরে একারণেই বলেছিলাম হেরেছি আমি, জিতেছেন শেখ হাসিনা। প্রমান করেছে সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। এগুলো লিখেছি ওকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় নির্বাচন নিয়ে আর বললাম না। তরপর বললাম আইভি তুমিও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাসো। সামনে আমাদের কঠিন লড়াই। এটা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। নির্বাচন পর্যন্ত বাঁচবো কীনা জানি না। করবো কীনা তাও জানি না। এখন একমাত্র চিন্তা দেশটাকে বাঁচানোর। চলো আওয়ামী লীগের হয়ে এই অপশক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
এসময় শামীম ওসমান বলেন, আজকে আমাদের মধ্যে দ্বন্দ থাকতেই পারে। তবে কাকে দিবেন সেটা নেত্রী ঠিক করবেন। আমাদের পনেরো বছর ক্ষমতায় রেখেছেন একটি মহিলা। আমরা কী শুধু তার কাছে চেয়েই যাবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রমান করতে হবে আমরা একটা পরিবার। আল্লাহর কসম মাথায় কাফন বেঁধে নামবো। ওরা জনসভা করুক আপত্তি নেই। তবে ষড়যন্ত্র করতে দেব না। নারায়ণগঞ্জ তো কন্ট্রোল করবোই, যদি বেঁচে থাকি নারায়ণগঞ্জ একাই যথেষ্ট ওদের মোকাবিলা করার জন্য।
এসময় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।