নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার আলমাস মিয়ার পুত্র দেওয়ান বাড়ীর ইমরান নামের ব্যক্তির কাছে ১ কোটি টাকা চাদাঁ চাওয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানা, পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেও কোন সহযোগিতা পান নাই বলে অভিযোগ করেছেন। এমনকি র্যাব-১১ বরাবর অভিযোগ করেও তাদের থেকে কোন প্রশাসনিক সহযোগিতা পান নাই। আর এতে করে ভুক্তভোগী পরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে সংবাদ সম্মেলনে জানান গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
রবিবার ২২ অক্টোবর দুপুরে ফতুল্লার বিসিক শিল্প এলাকা দেওয়ান বাড়িস্থ নিজ কার্যালয়ে যুবলীগ নেতা ইমরান সংবাদ সম্মেল করে এ কথা জানান। এ সময় তিনি পুলিশ সুপার এবং র্যাব এগার বরাবর দেয়া অভিযোগের দরখাস্ত সাংকবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
যুবলীগ নেতা ইমরান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফতুল্লা থানাধীন বক্তাবলী ইউনিয়নস্থ চর রাজাপুর এলাকায় আমার বাবার নিজ খরিদকৃত ও নামীয় ১৭ (সতের) শতাংশ সম্পত্তির উপর দেওয়ান স্টীল ফ্যাক্টরি শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ-দখল করে আসছি। উক্ত ফ্যাক্টরিটি অবৈধভাবে দখল নেওয়ার জন্য স্থানীয় কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী আমার কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবী করে। যদি চাঁদা না দেই তাহলে তারা আমার প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে। তাই আমি ঐ সন্ত্রাসীদের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করি। সন্ত্রাসীরা হলেন- কাশিপুর উত্তর নরসিংপুরের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সুমন (৩৯), চর রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা শাহিন (৪২), আব্দুল গফুরের ছেলে হামিধ, ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার নাসির (৪০), মৃত রোস্তাম আলীর ছেলে পিজ্জা শামীম (৫৫), শাসনগাঁঁও এলাকার নান্নুর মিয়ার ছেলে মুন্না (৩২), হারুন মিয়া ছেলে সজিব (৩০), মুসলিম নগর এলাকার আলী আকবরের সাদ্দাম বেপারী (৩০), শাহিন দর্জির ছেলে ইমরান দর্জি তাদের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে নয় টায় আমার নিজ বাড়িতে চাঁদার জন্য আসে। আমি তাদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানা, পুলিশ সুপার, র্যাব ১১ অভিযোগ দায়ের করি।
ভুক্তভোগী ইমরান জানান, অভিযোগ করার পর পুলিশ কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় সন্ত্রাসীরা অদ্য ১৯ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক সাড়ে তিনটায় উল্লেখিত বিবাদীগণ দেশীয় ধারালো ছুরি, চাকু, ও অস্ত্রসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমার দেওয়ান স্টীল ফ্যাক্টরির ভাড়াটিয়াদের মারধর করিয়া ফ্যাক্টরির জরুরী যন্ত্রাংশ সহ মালামাল নিয়া জোরপূর্বক ফ্যাক্টরির ভাড়াটিয়া ও শ্রমিকদের বাহির করিয়া আমার ফ্যাক্টরির মেইন গেটের সামনে ইট ও সিমেন্ট দিয়ে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে। এবং আমার ফ্যাক্টরির মধ্যে দেওয়ান স্টিল বিল্ডিং নামীয় দোকানের প্রায় ৩৫ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যের ঢেউটিন ও প্রোফাইল টিন এবং অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল মালামাল লুট করিয়া নিয়ে যায়। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপের প্রমাণ যেন না থাকে তাই তারা প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা, ডিভিআর মেশিন ভেঙ্গে ফেলে।
অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আমার প্রতিষ্ঠানের সামনে দেয়াল নির্মাণ করার সময় আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সাহায্য চাহিলে তারা আমাকে আশ্বস্থ করেও কোন পুলিশ পাঠায় নাই। আমি পরপর তিন বার ৯৯৯ এ কল করি। তাদের কোন সহযোগিতা না পেয়ে গত ১৯ অক্টোবর আমি ও আমার পিতা সশরীরে ফতুল্লা থানায় যাই এবং একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি । থানা থেকে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পায়। পুলিশ দেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় ও দেয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় । পুলিশ চলে গেলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরে ফতুল্লা থানার পুলিশের নিরব ভূমিকা দেখে আমরা ২১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আরও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এর আগে আমি ৯ অক্টোবর পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ করি এবং ১১ অক্টোবর র্যাব-১১ এ অভিযোগ করি এবং তাদের পরামর্শে র্যাব-১১ সিপিসি ১ কালিবাজার কার্যালয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাই নাই। প্রশাসনের কারো কাছে কোন সহযোগিতা না পেয়ে আমি সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হই। আপনাদের মাধ্যমে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আইনি সাহায্য কামনা করছি। আমার ফ্যাক্টরি, জায়গা ও আমার পরিবারের সকলের জানের নিরাপত্তা চাচ্ছি ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হাজী আলমাস দেওয়ান, রশিদ দেওয়ান, রনি দেওয়ান, বাছেদ দেওয়ান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য বক্তিবর্গ এবং সাংবাদিকবৃন্দরা ।