নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, ২৮ তারিখ নিয়ে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। জুজুর ভয় পাবেন না। বন্দরে অনেকে আমার সাথে থেকেই ফনা ধরছেন। এগুলো থাকবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কেউ কিছু করতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বন্দরের সমরক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানকে দেয়া এক সংবর্ধনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমার বড় ভাই নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর আমার ওপর নির্দেশ আসে নির্বাচন করার। আমার ইচ্ছে ছিল না। আমি আমার ভাইদের সংসদ সদস্য বানাতে চেয়েছি। আমি অন্যকে বানাতেই পছন্দ করি। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় আমি দুইবার এই এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। তাই আপনাদের জন্য কাজ করতে পেরেছি। সাতটি ইউনিয়নে সাতটি স্কুল করেছি।
তিনি বলেন, একেকটি ইউনিয়নে কাজ করার সময় চেয়ারম্যান ইউএনও উপজেলা চেয়ারম্যানরা আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছেন তাদের জন্যই এ সংবর্ধনা পাচ্ছি। আমার জন্য এটি নয় শুধু।
তিনি বলেন, মানুষকে একত্রিত করতে পারলে মানুষ স্বার্থপর না হলে শান্তির কোন অভাব হয় না। বন্দরে এমন কোন মিটিং হয়নি যেখানে কোন দল ছিলনা মিটিংয়ে। এমন কোন দল নেই যারা আমার মঞ্চে ছিল না।
আমি না শামীম ওসমান সেটা বড় ব্যাপান না। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আগামী সরকার গড়তে হবে। এটি আপনাদের ঈমানি দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। পাশের দেশে কী অবস্থা সেটা খবর নেন না। সেই সুযোগে একটা দল বিদেশিদের সুবাদে আস্ফালন করছে। ওরা নারায়ণগঞ্জকে উথালপাথাল করে ছেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, এমনও হয়েছে এমপি থাকা অবস্থায় আমার বাড়িতে বাজার হয়নি। তবুও চেষ্টা করেছি আগে দেয়ার। তারপর বাজার হবে। আমি করোনার সময় চেষ্টা করেছি মানুষের ঘরে ঘরে বাজার পৌছে দিতে। ভাল কাজ করতে হলে ভাল লোক দরকার। এদের মাধ্যমে আমি এগুতে পেরেছি। এ সংবর্ধনা আমার একার নয়। আপনারা সবার জন্যই দোয়া করবেন। আমরা যেন আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনায় পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করতে পারি। আমি আপনাদের ছেড়ে কখনও যাবো না বেইমানি করবো না। আমার ইচ্ছা আমার মৃত্যুর পর আমার কবরটা যেন বন্দরেই দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ একে এম শামীম ওসমান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে বিগত ৯ বছর যাবত সেলিম ওসমানের নানান উন্নয়ন নিয়ে তৈরি করা ‘ডকুমেন্টরি’ প্রদর্শন করা হয়। যাতে ছিল শিক্ষায় তার অবদান, সদর-বন্দরের অবকাঠাম গত উন্নয়নসহ মানবতা মুলক কর্মকান্ড। পরে দোয়া পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বক্তব্য পর্ব।
অনুষ্ঠানে বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ এর সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রফেসর ড.শিরিন বেগম, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ক্লাস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, এনসিসিআই এর পরিচালক মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বাংলাদেশ হুঁশিয়ারি সমিতির সভাপতি নাজমুল আলম, বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম সারোয়ার, বাংলাদেশ ডাইন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমজাদ হোসেন খসরু, আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জের সাবেক নারী সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলি, শামীম ওসমানের একমাত্র পুত্র ইমতিনান ওসমান আয়ন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, প্রমুখ।
পরিশেষে ক্রেস্ট ও ফুলের তোরা দিয়ে বিভিন্ন দলের, পেশার ও সাধারণ মানুষ সেলিম ওসমানকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।