ঢাকায় বিভাগীয় মহাসমাবে’কে সফল করার লক্ষে প্রস্তুতি মূলক আলোচনা সভায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, অনেকের প্রশ্ন যে দলে এত নেতা উপস্থিত হয় কর্মী বাদে সে জেলায় বিএনপি জামাত সন্ত্রাস করতে পারে কীভাবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রিজভী আহমেদ নারায়ণগঞ্জে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন আমি জানি। উনি মাসদাইরে আছে। শুরু থেকেই আমি জানি। শুধু দেখতে চেয়েছি ওদের সাংগঠনিক ক্ষমতা কতটুকু। আমি লজ্জিত হলাম, এদের সাথে খেলবো কীভাবে। ছাত্রলীগ তো খেলবে না। মহিলা লীগও তো বলবে না।
বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে (নম) ঢাকায় আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, শেখ হাসিনা মৃত্যুর ভয় করেন না। তিনি শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করেন। ষড়যন্ত্র আরেকটু হবে। আমি বলেছি ওরা নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে। কেউ ওদের ডেকে নিয়ে আসবে না। ওদের চরিত্র মানুষের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে। পশ্চিমাদের সুর নরম, এখন বলে শর্ত ছাড়া আলোচনায় বসো।
কী দৈন্য দশা ওদের। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আসে হরতাল করতে সাথে আটজন। পাগলও যদি দাঁড়িয়ে কথা বলে সেটা শুনতে ১০ জনের বেশি লোক হবে।
তিনি আরও বলেন, রিজভী সাহেব কেন্দ্রীয় নেতা আট নয়জন লোক নিয়ে টায়ারে আগুন লাগিয়ে হরতালের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন। অবরোধের দিনও আমরা জানি উনি কোথা দিয়ে বের হবেন। সেদিন বুঝেছিলেন তাদের অবস্থা খারাপ তাই শিবিরের ক্যাডার নিয়ে আমাদের ইয়াসিন ভাইয়ের পেট্রোল পাম্পের পাশের গলিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর প্ল্যান ছিল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ অত্যান্ত যোগ্যতা ও ধৈর্যের সাথে এগুলো লক্ষ্য রাখছেন। সাথে গোয়েন্দা সংস্থাও আছে।
আমরা একটানা ১৪ বছর ক্ষমতায়। আমরা চ্যালেঞ্জ করতে পারি ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে ওরা যা নির্যাতন করেছে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের এক এমপি ছিল পল্টিবাজ, আমাদের ১৭ জন লোককে হত্যা করেছিল। তৈমূর সাহেবের ভাই সাব্বিরকেও মেরেছিল। ওদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতিন চৌধুরীর গাড়িতে হামলা করেছিল। আমাদের কী অবস্থা ছিল বুঝুন। আমাদের নেতাকর্মীরা দেশে থাকতে পারেনি।
আমার বাড়ি হীরা মহলের দরজা ভেঙে প্রশাব করা হয়েছিল। হীরা মহল ভেঙে দেয়া হয়েছিল। আমার ভাইয়ের খামারে হাঁসের গলা কেটে ছেড়ে দিয়েছিল। রাইফেল ক্লাব ভাংচুর করা হয়েছিল। সেদিন এই কায়সারের বাবা প্রথম হুংকার দিয়েছিলেন, আমরা মরিনি। এ ছিল সেসময়ের পরিস্থিতি।
বিএনপির আন্দোলনের মানুষ হত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওরা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। আমি এক দেড় বছর আগেই বলেছিলাম এমন হবে। ঢাকায় একটা মিটিং হল। একটা আমাদের, একটা ওদের। আমাদেরটা ওদের চেয়ে বড় ছিল। সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মী নিয়েও ওদের মিটিং আমাদের চেয়ে ছোট ছিল। সরকারি দল হিসেবে আমাদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবেই। আমরা হামলা করিনি। ওরা গিয়ে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করল। পুলিশকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। ওদের ছাত্রদলের এক নেতা মৃত মানুষটাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে। সরকারি পুলিশকে এভাবে কুপিয়েছে। তার পকেট থেকে মোবাইল মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে।
অবরোধের প্রথম দিনে আড়াইহাজারে বিএনপির তান্ডবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আড়াইহাজারে পুলিশকে কোপানো হল। কিছু মানুষ তাকে ভ্যানগাড়িতে তুলে দেয়। তারপরও তাকে মারা হল। আমি প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেই আপনারা ধৈর্য্য ধরেছেন। ওরা ক্ষমতার ৫২ লক্ষ কিলোমিটারেও নেই। এখনই মৃত পুলিশকে চাপাতি দিয়ে কোপায় আর ক্ষমতায় আসলে কী করবে। সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে নির্দয়ভাবে পেটানো হচ্ছে।
আমরা ধৈর্য্য ধরেছি। আমরা দেখাতে চাই ওরা গণতান্ত্রিক শক্তি না। জামাত বিএনপি মিলে এ কাজ করেছে। ওরা ভয় দেখায় কাকে, শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা যেদিন ভয় পাবে সেদিন দুনিয়া থাকবে না। কালকে সংবাদ সম্মেলনে জবাব পেয়েছেন তো।
শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এক প্রেসিডেন্ট আছে। খবর নিয়ে একটু দেখবেন সে অন্য কোন দলে যাচ্ছে কীনা। তৃণমূলে তো যেতে পারবে না, তৈমূর আলম খন্দকার লাথি দিয়ে বের করে দেবে। বিএনপির বাচ্চা ছেলেদের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওদের যাবজ্জীবনও হতে পারে। এদের দায় দায়িত্ব কে নেবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু’র সঞ্চলনায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা এম এ রশিদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান ও আয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা এড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মাসুম, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলি ইউপি চেয়ারম্যন শওকত আলী, সহ-সভাপতি ও এনায়েত নগর ইউপি চেয়ারম্যন আসাদুজ্জামান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রফেসর ড.শিরিন বেগম, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু, মহানগর স্বচ্ছাসেবক লীগের জুয়েল হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগের সাফায়াত আলম সানি, বিন্দু সহ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।