স্বামীর পক্ষে প্রথম নির্বাচনী উঠান বৈঠকে লিপি ওসমান
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নৌকাপ্রতীকের পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারনায় নেমেছেন নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীমওসমানের সহধমির্নী ও জেলা মহিলা সংস্থার সভাপতি সালমা ওসমান লিপি। এ সময় তিনি বলেন,আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নিয়ে রওনা হয়েছেন দেশটা একটি উন্নয়ন দেশে পরিণত করতে। তিনি করে দেখিয়েছেন। যিনি করে দেখিয়েছেন তিনি ভবিষ্যতেও করে দেখাতে পারবেন। তাই শেখ হাসিনার উপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। তাই আমাদের নৌকাকে আবারো বিজয়ী করতে হবে। শেখ হাসিনাকে সাহায্য করছে শয়ন আল্লাহ। তাই আমাদের উচিত শেখ হাসিনার পাশে থাকা।
শুক্রবার ( ১৭ নভেম্বর ) সকালে সদর উপজেলা কমর আলী হাই স্কল এন্ড কলেজ কক্ষে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের উন্নয়ন ও শামীম ওসমান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নের একটা চার্জশীট তৈরি করেছি। এতটুকু বলতে পারি ১৯৯৬ সালে তখন আমায় কেউ চিনতো না। ৯৬ সালে আমি প্রথম বেরিয়ে ছিলাম এই আওয়ামী লীগের জন্য নৌকা মার্কার প্রচারনা করতে। শামীম ওসমান সাহেব তখন প্রথম নির্বাচনে দাড়ান। আমাদের প্রতিটি ঘরে ঘরে যেতে হয়েছে। তখন বয়েস কম ছিল। কিন্তু যেই নারায়ণগঞ্জকে প্রথম আমি সেদিন দেখেছি, স্বাধীনতার পর উন্নয়নের ছোয়া নারায়ণগঞ্জে একেবারেই ছিল না। বক্তাবলী একটি অজোপাড়া গায়ের মত ছিল। কোন গ্যাস লাইন ছিলনা। টেলিফোন ছিল না। বিদ্যুৎ ছিলনা।আমি সেদিন তাদেরকে কথা দিয়ে ছিলাম আপনারা তাকে ভোট দেন তিনি আপনাদের হয়ে কাজ করবে। তার প্রমান ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি ২৬’শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন।মাদকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। এতোটাই সোচ্চার ছিলেন যে তার উপর বোমা হামলা করা হয়ে ছিল। আমি সেদিন সেখানে গিয়ে ছিলাম। আমার জুতার অর্ধেকটা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। আমার আধাঘন্টা সময় পর্যন্ত জানতাম না শামীম ওসমান বেচে আছেন নাকি মারা গেছেন। ১৫০ বছরের কলঙ্ক পতিতা পল্লী উচ্ছেদ করে নারায়ণগঞ্জকে কলঙ্ক করে ছিলো। তিনি নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে চিন্তা করতে পিছিয়ে যান নাই। অকুতো ভয়ে লড়াই করেছে। তার পরিবারের মানুষ ছিল নারায়ণগঞ্জের মানুষ ছিল তার সাথে। এমন মানুষের উপর বিশ্বাস রাখা যায়। যদি উনি কাজ করে থাকেন তাহলে আমি উনার জন্য জনগনের কাছে যাবো।
উপস্থিত নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা মিথ্যাচার করছে তারা আপনাদের ঘরে ঘরে আসবে। আপনাদেরকে টাকা দিয়ে কিনতে চাইবে। যেটাকা দিয়ে কিনতে চাইবে তাদের টাকাটা রেখে দিবেন। কারন সেগুলো কালো টাকা। তাদের অনেক টাকা। কিন্তু আপনার ঈমান আপনার বিশ্বাস অন্তরে ধারন করবেন। আপনার বিবেক হবে আপনার ভোট। তিনি বলেন, অসহযোগ আন্দোলনের শেষ দিকে হীরা মহলে ছিলাম। আমাদের বাসায় একে একে ১৮টা লাশ এসেছিল। প্রতিদিন একটা করে লাশ আসতো। তারা কিন্তু প্রাণ দিয়েছে আপনাদের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য তারা জীবন দিয়েছে। এখন যদি টাকার কাছে ভোট বিক্রি হয় তাহলে তাদের আত্মার সাথে বেঈমানী করা হবে। যারা জনগনের জন্য আন্দোলন করছে বলছে তারা আসলে কি চাচ্ছে তারা। ক্ষমতার যাওয়ার জন্য। যদি জনগনের জন্য ক্ষমতায় যেতে আন্দোলন করা হয় তাহলে কেন জনগনকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে। বাসকি তাদের বাপের টাকায় কেনা? এটা কেমন আন্দোলন। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছি এটা স্বীকার করি। কিন্তু এই দাম শুধু আমাদের দেশে নয়। যুদ্ধের কারনে বৈশ্বিক মন্দার কারনে বিশ্বের ৪৫টি দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আজকে আমাদের দেশে একটি ডিম ১৫টাকা আর কানাডায় একটি ডিমের ডাম ৪৫টাকা। এই দাম বাড়ার কারনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি উদগ্রীব। তিনি যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে এই জিনিসপত্রের দাম আবার কমবে বলে আমি আশা করি। যিনি মানুষের কষ্ট দেখে মায়ানমারের মানুষদের জায়গা দিতে পারে। তিনি দেশের মানুষের কষ্ট দেখে জিনিসপত্রে দাম কমাতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর ড.শিরিন বেগম’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন , বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কামরুননেছা মান্নান, বাংলদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মীর মেহজাবিন আলী।
ফতুল্লা থানা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাতেমা মনির’ সঞ্চলনায় আরোও উপস্থিত ছিলেন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের ফারজানা রহমান লাকী, কমর আলী হাই স্কল এন্ড কলেজ দাতা সদস্য হাজী মো. শাহা আলম, প্রধান শিক্ষক মো.নূরুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মায়া প্রমুখ।
পরে নেতৃবৃন্দরা সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দদের ননিয়ে আরেকটি বৈঠক করেন।