দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল আবাসিক এলাকার কাসসাফ মার্কেট সংলগ্ন ডিএনডি ক্যানেলের উপর অবস্থিত ব্রিজটি। এর ফলে ঝুঁকি নিয়ে ওই ব্রিজে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এদিকে সংস্কারের অভাবে ব্রিজটির পিলারের অধিকাংশ ভেঙ্গে গিয়েছে। বাকি যে অংশগুলো অক্ষত রয়েছে সেগুলোরও অবস্থা ভয়াবহ। বর্তমানে ব্রিজটিতে পথচারীদের হাঁটাচলা করতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নারী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরা ভয় নিয়ে এটিতে চলাচল করছেন।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল এলাকায় কাসসাফ মার্কেট সংলগ্ন ব্রিজটিতে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
জানা যায়, এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে এবং শিমরাইল মোড়ের মার্কেটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার জন্য ১০ বছর পূর্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে। বর্তমানে ব্রিজটি বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া খাল পারাপারের জন্য কাছাকাছি কোনো ব্রিজ না থাকায় আশেপাশের ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল এই ব্রিজটি দিয়ে আনা নেওয়া করে থাকেন। এর ফলে ব্রিজটি ভেঙ্গে গেলে হীরাঝিল এলাকার সঙ্গে শিমরাইল এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি সাধারণ পথচারীদের চলাচল করতে অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে। এদিকে বর্তমানে ডিএনডি পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি মেঘা প্রজেক্টের কাজ চলমান থাকলেও এটি শেষ হতে আরও অনেকদিন লাগবে। তাই এর আগে ব্রিজটি চলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য সিটি করপোরেশনের নিকট আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুই মাস আগেও ব্রিজটি এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে সাময়িকভাবে অন্তত যেনো পথচারী চলাচল করতে পারে ওই ব্যবস্থাই করে দিয়েছিলেন। আর ব্রিজে যেনো কোনো মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে কোনো পরিবহনই চলাচল করতে না পারে সেজন্য ব্রিজের দুইপাশে বাঁশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু দুই মাস পরই ব্রিজের অবস্থা আবারও আগের মতো রূপ ধারণ করেছে। শুকনো মৌসুম হওয়ায় বর্তমানে ব্রিজের পিলারের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে যেকোনো সময় এটি ভেঙ্গে পড়বে।
কাসসাফ মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করে আসছেন ইসরাফিল হোসেন নামের সিদ্ধিরগঞ্জের এক ব্যবসায়ী। কথা হলে তিনি জানান, হীরাঝিল এলাকার ৬নং রোডে তার একাধিক গোডাউন রয়েছে। এই গোডাউন থেকে মালামাল মার্কেটে এনে তিনি ব্যবসা করে থাকেন। যদি ব্রিজটি ভেঙ্গে যায় তাহলে তার ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতিসাধণ হবে।
শাহ্ আলমের মতো এমন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন আশেপাশের সব ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে হীরাঝিল এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে। পাশাপাশি জরুরী কাজে বের হওয়া সাধারণ মানুষও বিপদে পড়বেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এর আগেও ব্রিজটি এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে আমি তখন সাময়িকভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেই। পাশাপাশি নতুন ব্রিজ করার বিষয়ে আমি নাসিক মেয়র থেকে শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাগণের সঙ্গে কথা বলি। যেহেতু খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে। সে কারণে সিটি করপোরেশন পক্ষ থেকে এখানে নতুন একটি ব্রিজ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই চিঠির পক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমানও তাতে সুপারিশ করেছেন। আশা করছি, খুব শিগগিরই এই ব্রিজ করার অনুমোদন পেয়ে যাবো। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও বলা হয়েছে তারা তাড়াতাড়ি ব্রিজ করার বিষয়টি দেখবেন। আশা আছে, এই শুকনো মৌসুমেই কাজ শুরু করার। আর এবার এমনভাবে ব্রিজ করা হবে যেনো এর উপর দিয়ে যেকোনো হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন টেকসই হয়। আমার পক্ষ থেকে আমি চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছি না।