নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুরে আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন কাশিপুর ইউপি ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইমদাদুল হক খোকা, তরকারী ব্যবসায়ী বাদশা ও ডিস বদুর নাম। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা ও সালাউদ্দিন ওরফে ব্লেড সালুর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে দুই গ্রুপের সন্ত্রাসী বাহীনি।
স্থানীয়দের সূত্রমতে জানাযায়, কাশিপুর ইউনিয়নের শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা ও সালাউদ্দিন ওরফে ব্লেড সালু এই দুই গ্রুপের অর্থ যোগানদাতা তরকারী ব্যবসায়ী বাদশা ও ডিস বদু হলেও পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন কাশিপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইমদাদুল হক খোকা ও বড় রাজু। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে হীরা ও ব্লেড সালু। ইমদাদুল হক খোকার পরিচিতি রয়েছে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য। এরই সূত্রধরে অত্রএলাকায় গড়ে উঠে ত্রাসের রাজত্ব। খোকা মেম্বারের কোন কাজকর্ম বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও হীরা ও ব্লেড সালুকে প্রশাসনের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্বে থাকার কারনে খোকা মেম্বারকে হীরা ও ব্লেড সালু সহ তাদের বাহীনির রক্ষককর্তা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে বলে এলাকাবাসী জানান।
তারা আরোও জানান, বিগত বছরে সালাউদ্দিন ওরফে ব্লেড সালু বিভিন্ন মামলার আসামী৷ ফতুল্লা থানা পুলিশ ব্লেড সালুকে গ্রেফতার করতে গেলে সঙ্গে থাকা সুইচগিয়ার চাকু দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাকে আহত করে সরকারী অস্ত্র ও ওয়ারলেস ছিনিয়ে নেয়। পরে রক্ষাকর্তা খোকা মেম্বারের সহযোগীতায় অস্ত্র ও ওয়ারলেস ফিরেপান সেই পুলিশ কর্মকর্তা।
এরপরে শুরু হয় বড় রাজু ও ছোট রাজুর মধ্যে তুলকালাম কান্ড। এলাকা দখল করে দিতে বড় রাজুর ইন্ধনে শুরু হয় দেওভোগ বাঁশমুলি এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা ও সালাউদ্দিন ওরফে ব্লেড সালুর ব্যাপক তাণ্ডব।
কাশিপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী হীরা ও ব্লেড সালু সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে অন্ততপক্ষে ৩শতাধিকেরও উপরে সন্ত্রাসী রয়েছে। এই দুই গ্রুপকে ব্যবহার করে মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন কাজের অর্থ যোগানদাতা ও সেল্টার দাতারা হলেন উত্তর নরসিংপুর এলাকার তরকারী ব্যবসায়ী বাদশা, আলী পাড়া শান্তি নগর এলাকার ডিস বদু, দেওভোগ শান্তিনগর এলাকার বড় রাজু ও কাশিপুর ইউপি ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইমদাদুল হক খোকা।
প্রশঙ্গত কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও আলীপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি সুরুজ মিয়াকে ২৭ জুন দুপুরে কাশিপুর শান্তিনগর আলীপাড়া জামে মসজিদে থাকাকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা ও সালাউদ্দিন ওরফে ব্লেড সালু সহ তাদের বাহিনীর দ্বারা নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন। বাবা সুরুজ মিয়াকে বাচাতে গেলে গুরুত্বর আহত হন দুই ছেলে রাজু (৪৩) ও জনি (৪১)৷ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবার নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করিলে ইতিমধ্যে প্রধান আসামী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা সহ পুলিশ ১৪ জনকে আটক করে।
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সেল্টার দাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নুরে আযম মিয়া বলেন, এই ঘটনায় তথ্য-উপাত্রের সাথে যারা জড়িত আছে তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দিবনা।