নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় মহানগর যুবলদ নেতা আনোয়ার হোসেন আনু হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারেদাবীতে জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশানস কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। ভাতিজা রাসেল ও চাচী পান্নার পরকিয়া ঘটনা জেরে এ হত্যাকান্ডেরর ঘটনা ঘটেছে বলে স্বজনদের দাবী।
মঙ্গলবার ( ২৭ আগস্ট ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল নিহত আনোয়ার হোসেন আনুর মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরে প্রধান প্রধান সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় অবস্থান করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
দেওভোগ ৫৪ এল এন এ রোড এলাকার মৃত: ছায়েদ আলী মিয়া ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করর্পোরেশন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির এর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আনু (৪৮)।
এঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে, তারা হলেন নিহত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে জান্নাত আরা জাহান প্রেরনা (২১) ও ছেলে সারিদ হোসেন (১৯), বাবুরাইল এলাকার করিম মিয়ার ছেলে ও সাবেক স্ত্রী ভাই – বোন নুর আলম (৪৫), কাজল (৩২) ও রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬) ও কাজের মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়।
এবিষয়ে নিহত আনোয়ার এর স্বজন ও এজহারে উল্লেখ্য করেন, নিহত আনোয়ার হোসেন আনুর ভাতিজা রাসেল মাহমুদের সাথে সাবেক স্ত্রী পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়িয়া তোলে। ২০১৮ সালে জামতলা বাসায় একটি কক্ষে ভাতিজা রাসেল ও সাবেক স্ত্রী পাপিয়া আক্তার পান্নাকে একত্রিত অসামাজিক অবস্থায় ধরে ফেলে। সেই থেকে প্রতিশোধে আনুর উপর ক্ষুব্ধ হয় রাসেল মাহমুদ। ভাতিজার সাথে চাচীর প্রমের সম্পর্কে বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্ঠা করি। সাবেক স্ত্রী পাপিয়া আক্তার পান্নাকে ঘর সংসার করার জন্য বিভিন্ন ভাবে বুঝাইলে আনোয়ার হোসেন এর কথায় কর্নপাত না করে ডিভোর্স দিয়ে রাসেল মাহমুদ এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় পান্নার। পরে নিহত আনুর ছেলে সারিদ হোসেন ও জান্নাত আরা জাহান প্রেরনাকে পান্নার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। মা পান্নার কথায় ছেলে ও মেয়ে সব করতেন। এবং আনোয়ার হোসেন এর যাবতীয় আয়-রোজগার আনোয়ার এর ছেলে ও মেয়ের মাধ্যমে পান্না ভোগ করতে থাকে। এমনকি তার ক্রয়কৃত গাড়িটাকেও ব্যবহার করতে দিতেন না। এ নিয়ে আনোয়ার কোন প্রকার প্রতিবাদ করিলে বিভিন্ন সময় খুন জখমের হুমকি প্রদান করা হত।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজহানামা অভিযুক্তরা হলেন ফতুল্লা বিসিক মার্টিন গার্মেন্টেস গলি গোল মোহাম্মদের ছেলে রাসেল মাহমুদ (৪২). নিহতের সাবেক স্ত্রীরী বর্তমান রাসেল মাহমুদের স্ত্রী পাপিয়া আক্তার পান্না (৪২), মাসদাইর আদর্শ স্কুল রোড (হেলেনা কটেজ এর ৯ম তলার ভাড়াটিয়া) নিহতের মেয়ে জান্নাত আরা জাহান প্রেরনা (২১) ও ছেলে সারিদ হোসেন, বাবুরাইল এলাকার করিম মিয়া ছেলে নুর আলম (৪৫), কাজল (৩২) ও মেয়ে রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬), বিসিক মার্টিন গার্মেন্টেস এর গলির মৃত: আজগর সরদার ছেলে
গোল মোহাম্মদ (৬৫)সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে নিহতের ভাই হাজী আবুল কাশেম বাদশা বাদী হয়ে মামলা দায়েরকরেন।
এখানে আরোও বলা হয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ভাতিজা রাসেল মাহমুদ ও নিহতের স্ত্রীর পাপিয়া আক্তার পান্না সাথে পরকিয়া ঘটনায় ধরা পরে ২০১৮ সালে। পরে আনোয়ার হোসেন আনুর ও পাপিয়া আক্তার পান্না সাথে বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্স হলে চাচীকে বিয়েকরেন ভাতিজা রাসেল মাহমুদ। পাপিয়া আক্তার পান্না দুই সন্তানদেকেও নিজের মত গড়ে তোলে আনোয়ার হোসেন আনুর জায়গা সম্পত্তি নিতে ব্যবহার করেন ছেলে ও মেয়েকে। দিনের পর দিন ছেলে – মেয়েদের মানষিক নির্যাতনে শিকার হতে থাকেন নিহত আনোয়ার।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে জেলা যুবদলের আহ্বয়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, আনোয়ার হত্যার ঘটনার যারা জড়িত সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী করেন এবং নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন হত্যা ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জন ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রির্পোট ঘুড়িয়েছে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি হলে আমরা কাউকে ছার দিবনা।
এ ঘটনায় ফতুল্লা থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আনোয়ার হোসেন আনুর মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল পাওয়া যায় কোমরের মেরুদন্ড হাড় ভাঙ্গা, ডান পা ভাঙ্গা ও পিঠে খামছির দাগ পাওয়া গিয়েছে। পরে ময়নাতদন্ত জন্য মৃতদেহ নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়।
এবষয়ে নিহতের ভাগীনা গোফরান হৃদয় বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহোদয় আমাদের আশ্বস্ত করেন নিহতের ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্ত করা হবে প্রয়োজনে ডিবিতে মামলা হস্তান্তর করা হবে। এটা কোন রাজনৈতীক মামলা না তাই কাউকে ছাড়দেওয়া হবেনা। তিনি আরোও বলেন নিহতের ভাতিজা ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ নিহতের স্ত্রীর পাপিয়া আক্তার পান্না সাথে পরকিয়া সম্পর্ক হাতে নাতে ধরা পরারর পর থেকে আমার মামার উপর মানুষিক নির্যাতন করেন করা হয়।
এবিষয়ে ফতুল্লা থানা অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম মিয়া জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার এজহার ভুক্ত আটককৃত আসামীদের আদালতে প্রেয়ণ করা হয়েছে।