নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাদ আছর দেওভোগ সাকিম আলী জামে মসজিদে পারিবারিক উদ্যোগে এ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় নিহত আনোয়ার হোসেন এর বড় ভাই ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, বড় ভাইসহ আত্মিয় স্বজন, বিএনপি ও এলাকার স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের ভাগীনা গোফরান মাহমুদ হৃদয় এসময় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার মামা এই এলাকার সন্তান আপনার ভালোবাসার মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তি হয়েও খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন যা আপনারা দেখেছেন। আমার মামাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার ন্যায় বিচার চাই ও আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই। আপনারা আমার মামার জন্য দোয়া করবেন, সে কোন অন্যায় করে থাকলে আল্লাহ দিকে তাকিয়ে উনাকে ক্ষমা করবেন। ন্যায় বিচার আদায়ে আমাদের পরিবারেকে সহযোগিতা করবেন। অপরাজনৈতিক ভাবে এই হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন রূপ দিতে চাইলে আমাদের পাশে থাকবেন।
প্রসঙ্গত বাদী পক্ষের জেলা প্রশাসক ও পুলিস সুপার স্মারকলিপিতে উল্লেখ্য করেন, গত সোমবার ২৬ আগস্ট দুপুরে ছোট ভাই আনুর মেয়ে আমার আরেক ভাতিজির কাছে ফোন করে জানায় ওর বাবাকে পাওয়া যাচ্ছেনা, পরমূহূর্তে আমরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করতে থাকি, কোথাও তার কোন খবর মিলেনি। ঠিক বিকেল ৫ টার সময় মাসদাইর ঈদগাহ সংলগ্ন হেলেনা কটেজ এর দশ তলা বিল্ডিংয়ের লিফটের কোর জায়গায় আমার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আনুর লাশ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। একী ভবনে তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতো। আমরা আশঙ্কা করতেছি তার ছেলে মেয়ে ওর মা এবং তার বর্তমান স্বামী রাসেল এর সাথে যোগসাজশ করে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। রাসেল অতীতে অনেকবার আনোয়ার হোসেন আনুকে মারার চেষ্টা করে যা কোনভাবে সফল হয়নি। রাসেল আমাদের সম্পর্কে ভাতিজা হয়, আমার জেটাতো ভাইয়ের ছেলে। রাসেলের সাথে তার স্ত্রীর পরকিয়ার সম্পক জানতে পারার পর থেকে আমার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আনু তাকে বাড়িতে আসতে বারণ করে কিন্তু রাসেল বিভিন্ন উপায়ে তার স্ত্রী পান্নার সাথে যোগাযোগ বজায় রাখে আর এ বিষয়টি একপর্যায়ে পারিবারীক ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। দেওভোগের বাড়িতে বসবাসের কারনে স্ত্রী পান্না রাসেলের সাথে সহজেই মেলামেশা করতে না পারার কারনে সে স্বামীকে অন্যত্র বাসা নিতে চাপ প্রয়োগ করে। স্বামী আনোয়ার হোসেন পত্রিক ভিটা ছেড়ে মাসদাইর একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিতে বাধ্য হয় এবং সেখানে তার অনুপস্থিতীতে তার ছেলে মেয়ের সহযোগিতায় রাসেল বিভিন্ন সময় যাওয়া আসা করতে থাকে।
এখানে আরোও উল্লেখ্য রয়েছে, নিহত আনোয়ারের ফ্ল্যাটে রাসেলের যাওয়া আসার খবর জানতে পারার পর তার স্ত্রীকে রাগচাপ দিলে সে আনোয়ার হোসেনকে মারার জন্য ২০১৯ সাল জানুয়ারীর ২তারিখে আমলা পাড়া এলাকার একটি ফ্ল্যাটে রাসেলের সাথে দেখা করে, আর এই খবর আনোয়ার জানতে পেরে সাথে সাথে সে তার বন্ধু বান্ধব নিয়ে আমলা পাড়া ছুটে যায় এবং অপ্রীতিকর অবস্থায় তাদের দুজনকে হাতেনাতে ধরে। ধরার পর পান্না ও রাসেল উভয়েই হাত জোড় করে ক্ষমা চায় আর ওয়াদা করে তারা আজকের পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ রাখবে না। কিন্তু তারপরেও তারা অবৈধ যোগাযোগ বজায় রাখে।
বিষয় নিয়ে পারিবারীকভাবে অশান্তি দেখা দিলে স্ত্রী পান্না পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে স্বেচ্ছায় আনোয়ার হোসেন আনুকে ২০২০ সালের ৩০শে জুন তালাক নোটিশ পাঠায়। এবং প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েকে তার বাবার কাছে রেখেই ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর রাসেলের সাথে বিবাহ কাজ সম্পন্ন করে। মায়ের প্ররোচনায় ছেলে মেয়েও বাবার সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার করতে থাকে, এমন কি মাঝে মাঝে ছেলে মেয়ে বাবার গায়ে হাত তুলতো, কিন্তু আমার ছোট ভাই লজ্জায় কাউকে কিছু বলতো না। ওরা প্রতিনিয়ত মানসিক যন্ত্রনা দিয়ে নাস্তানাবুদ করে রাখতো।