ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের (আরএমও) মো. জহিরুল ইসলামের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই অভিযোগ হট্রগোল। নারায়ণগঞ্জ শহরে ১শ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বজনরা নবজাতকের মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন।
পরে নিহত নবজাতকের পিতা অটোচালক লিটন চন্দ্র সাহা হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডাঃ আনুকা রায়সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে এ অভিযোগটি দায়ের করেন। এছাড়া এ ঘটনায় হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সিনিয়র নার্স ফয়জুন্নেসা জড়িত বলেও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন বাদি লিটন চন্দ্র সাহা।
নবজাতকের মা লিপি রানী সাহা বলেন, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমার প্রসব ব্যাথা অনুভব করলে আমাকে ১শ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসে। পরে চেকআপ করে আমাকে লেবার রুমে নিয়ে গিয়ে গেলে সেখানে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব হয়।
আমি ডাক্তারকে আমার কি বাবু হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন ছেলে বাবু হয়েছে। আমি আমার বাচ্চার কান্না শব্দ পেয়ে তাকে আমার কাছে চাইলে তারা বলেন একটু পরে দিচ্ছি। এরপর আমার সাথে থাকা আমার মাসিকে বের করে দেয় এবং আমার বাচ্চাটিকেও আমাকে দেখতে দেয়নি।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা জানায় মরা বাবু হয়েছে। চারটা বাজে আমার বাবু হলে তারা সাতটা বাজে কিভাবে বলে আমার মরা বাবু হয়েছে। কিন্তু আমি আমার ছেলের কান্নার শব্দ শুনেছি। আমি এ ডাক্তার সহ যারা এর সাথে জড়িত সকলের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
নবজাতকের পিতা লিটন চন্দ্র সাহা জানান, হাসপাতালের অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আয়া বলেন বাড়াবাড়ি না করে দ্রæত নবজাতক বাচ্চার মরদেহটি হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে অন্যথায় মরদেহটি ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন।
আমি ডাঃ আনুকা রায়সহ উপস্থিত নার্স ও আয়াদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, আমার সন্তান জীবিত জন্মগ্রহণ করেছে, আমার স্ত্রী কান্নার শব্দ শুনেছে বললে তারা আমার সহিত খারাপ আচরন করে এবং নানা ধরনের ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা এই অভিযোগটি আজকে আমলে নিয়েছি। সিভিল সার্জনের সাথে বসে আমরা একটি কমিটি করতেছি।
কোন প্রকার দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে স্যার আসলে আমরা এটা করবো। আমাদের কোন স্টাফ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।