নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির এর ছোট ভাই ফতুল্লায় আলোচিত যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন আনু হত্যা মামলায় তিনজনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালত।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১ আদালতের বিচারক মোঃ আবু শামীম আজাদ এর আদালতে এ শুনানি করা হয়।
আনোয়ার হোসেন আনু হত্যা মামলার আসামী বাবুরাইল এলাকার মৃত করিম মিয়ার সন্তান নূর আলম (৪৮), কাজল (৩৫), রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬) পক্ষের আইনজীবী এড. রায়হান বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১ আদালতে জামিন চাওয়া হয়।
তবে বাদী পক্ষের আইনজীবী এই আবেদনের বিরোধিতা করে এড. রাজিব মন্ডল জানান, “প্রধান আসামী রাসেল মাহমুদ ও পান্না গ্রেফতার না হওয়ায় এবং আসামীরা কারাগারে থাকা অবস্থায় বাদী পক্ষের স্বজনদের বাড়ি বাড়িতে হুমকী দেওয়া হচ্ছে, তা আমরা আদালতের বিচারক মহোদয়কে অবগত করেছি। সেই প্রেক্ষিতে দায়রা জজ এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এর আসামী নূর আলম (৪৮), কাজল (৩৫), রোকসানা আক্তার পুতুল (৪৬)কে জামিন নামঞ্জুর করেছেন।”
মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনুর হত্যা মামলার বাদী হাজী আবুল কাশেম বাদশা ও স্বজনেরা এবিষয়ে বলেন, “আমরা প্রতিনিয়তই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ঢগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিসিকে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন প্রধান আসামী রাসেল মাহমুদ ও পাপিয়া আক্তার পান্নাকে গ্রেফতার না করাতে আমাদের জীবন হুমকীতে রয়েছে। আমাদের প্রতিনিয়তই কোন না কোন ভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে হুমকী সহ ভয়ভীতি চালিয়ে যাচ্ছে। রাসেল মাহমুদ সে নিজেই একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, আমরাদের স্বজনদের বাড়িতে প্রতিনিয়তই অস্ত্রধারী সন্ত্রীদের পাঠাচ্ছে। বিএনপি একজন স্বনামধন্য ব্যাক্তির নাম ব্যবহার করে এবং ছত্র-ছায়ায় রাসেল মাহমুদ ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছেন। ফতুল্লা থানা পুলিশ তদন্তের সাথে মিটিং করে রাসেল। অপর দিকে পুলিশ বলছে প্রধান আসামীকে তারা নাকি খুজে পাচ্ছে না। তাই আমরা জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়কেও এ বিষয়ে অবগত করেছি। কিন্তু কোন প্রতিশ্রুতি পেলাম না।”
তারা আরোও বলেন, “আমরা জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করেও কোন প্রতিকার পাইনাই। এছাড়া মামলার তদন্তকারী অফিসার তার কাছ থেকে মামলার আসামী গ্রেফতারের সুনির্দিষ্ট কোন সুরাহা পাচ্ছিনা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ রয়েছে। আসামী রাসেল আনু হত্যা মামলাটাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং আমাদের মিথ্যা কাউন্টার মামলা দিয়ে হয়রানী করাচ্ছে। যৌথ বাহিনী দুইদিন অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করতে পারে নাই। আজকে পাহাড়ের মত জায়গা থেকে আসামী গ্রেফতার হয় কিন্তু রাসেল কে ধরা হচ্ছেনা। ডিভোর্স হওয়ার পরেও আসামীরা ঐ ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়মিত যাতায়ত করত।এবং পান্না ঐ বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়ির ম্যানেজারকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভাড়া নিয়েছেন। ভাড়া যাওয়ার পর থেকে আনুর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার দিয়ে কোন দিন আমাদের ফোন দিত না অথচ সেই দিন ২০ টা ফোন করা হয়। আনুর মৃতদেহ পাওয়ার পর শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। গ্রেফতার কৃত আসামী রোকসানা আক্তার পুতুল বলেছে একটা মেয়ের দুইটি স্বামী থাকতেই পারে। আমরা আশঙ্কা করতেছি পান্না ও তার স্বজন সহ ছেলে, মেয়ে এবং তার বর্তমান স্বামী রাসেল এর সাথে যোগসাজেশ করে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। রাসেল অতীতে অনেকবার আনোয়ার হোসেন আনুকে মারার চেষ্টা করে যা কোনভাবে সফল হয়নি এবং প্রতিনিয়তই রাসেল ও পান্না ঐ বাড়িতে যাতায়াত করতেন।”