নারায়নগঞ্জ বন্দরে দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে পারটেক্স বোর্ড মিলস শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (১ লা অক্টোবর) সকালে নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ড হরিপুর এলাকায় কারখানার সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। দুপুরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে চলতি মাসে ২ ধাপে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত আগষ্ট এবং সেপ্টেম্বর দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে এই আন্দোলনের ডাক দেয় সকল স্টাফ এবং ওয়ার্কার বৃন্দ। মুলত গত ৩ বছর যাবত মালিক পক্ষ বেতন ভাতা নিয়ে তালবাহানা করছে। দীর্ঘদিনের ক্ষোভে আন্দোলন রত শ্রমিকরা সকাল থেকে পারটেক্স গেইটে বিক্ষোভ করে।
খবর পেয়ে দুপুরেই টহলরত সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রমিকরা জানান, রোববার দুই মাস বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। দুইদিন তালবাহানার পর সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে বকেয়া বেতনের দাবিতে গেইটের সামনে রাস্তায় অবস্থান করে বিক্ষোভ করে। পরে বন্দরে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপস্থিত ছিলেন, মেজর আশরাফুল সহ ৬ গাড়ি সেনা সদস্য, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন,উপজেলা নির্বাহী অফিসার – জনাব ডাঃ মুহাইমিনুল ইসলাম,বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ – তরিকুল ইসলাম সহ বন্দর থানা এবং শিল্প পুলিশ সদস্যের বিভিন্ন টিম।
এ ঘটনার পরে শ্রমিকরা ১৯ টি দাবি উপস্থাপন করলেও এক পর্যায়ে পারটেক্স গ্রুপের সিইও হাবিবুর রহমান এর অনুরোধে শ্রমিকদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি টিম নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করতে যান।
শ্রমিকরা জানান, রোববার দুই মাস বকেয়া বেতন পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিল কর্তৃপক্ষ। দুইদিন তালবাহানার পর সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে বকেয়া বেতনের দাবিতে গেইটের সামনে রাস্তায় অবস্থান করে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়া হয়েছিল। পরে পুনরায় তালবাহানা শুরু করলে মঙ্গলবার আমরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করতে বাধ্য হই।
আদমজীতে অবস্থিত শিল্প পুলিশ-৪ পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা বলেন, শ্রমিকদের জুলাই মাসের ১০ শতাংশ অপরিশোধিত, আগস্ট মাস ও সেপ্টেম্বর শেষের দিকে এখনো শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শ্রমিকদের প্রতিনিধি, কারখানা কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ, জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতার্রা বসে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন।
এ বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক রাজীব চন্দ্র ঘোষ জানান, বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মালিকপক্ষ শ্রমিক ও প্রশাসন ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে প্রতিষ্ঠানটির এমডিসহ উর্ধতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা শেষে মালিকপক্ষ জানিয়েছেন আগামী ৫-৬ অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকদের আগষ্ট মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। এছাড়া ২০-২৫ অক্টোবরের মধ্যে সেপ্টেম্বরের বেতন পরিশোধ করবেন। এছাড়াও শ্রমিকরা অন্যান্য যেসকল দাবি সেগুলো নিয়ে ১০-১২ অক্টোবরের মধ্যে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসে সমাধান করবেন।