জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, “স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ১৭ বছর আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। তারা আমাদের উপর নির্যাতন, খুন, গুম, আয়না ঘরে নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়েছে কিন্তু আমরা তা আমলে নেইনি৷ আমরা বুলেট বুকে নিয়েও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়েছি। আমরা অনেক ত্যাগের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি। স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর ) বিকালে কাশিপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য লুটপাট ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরোও বলেন, এখন আমাদের জনপ্রতিনিধিত্ব সরকার নাই। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সমর্থনে আমরা আছি। তারা রাষ্ট্রের কাছে কি পেয়েছে? রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকে সে সমস্ত প্রতিষ্ঠান স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার একেবারে ধ্বংশ করে দিয়ে গেছে। এরমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান। যারা মানুষের ধনসম্পদ রক্ষা ও জনগণের জানমাল রক্ষায় তৎপর থাকে সেই পুলিশ বাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি, এমনকি সেনাবাহিনীকে স্বৈরাচার তাদের নিযের বাহিনী বানিয়ে সাধারণ মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছে। সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, এতে নারী-শিশুও রক্ষা পায় নাই। এর কারনে পুলিশবাহিনীর মনবল হারিয়ে ফেলেছে। তারা থানা ফাঁকা রেখে পালিয়েছে। যে পুলিশ অবৈধভাবে টাকা কামিয়েছে তারা পালিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ছাত্র-জনতা ও দলীয়ভাবে আন্দোলনে স্বৈরশাসক পালিয়ে গিয়েগেছে। ৫ তারিখে পালিয়ে গেছে ৮ তারিখে দেশে কোন সরকার ছিল না৷”

তিনি আরোও বলেন, “কোন দলের দুষ্কৃতিকারী আইনশৃঙ্খলা অবনতি করতে নাপারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। স্বৈরাচারের সময় যত নির্বাচন হয়েছে দিনের ভোট রাতে হয়েছে, নিজেদের ফলাফল তৈরী করে ঘোষণা করেছে। অবৈধভাবে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে রেখেছে কিন্তু আমাদের আন্দোলনে স্বৈরাচার পতন হয়েছে। আমরা গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই। দেশে বৃহত্তম দল বিএনপি তাই এ দলের উপর দায়বর্তায় তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মেগা প্রজেক্ট এর নামে লুটপাট করেছে। একজন নবজাতক নিস্পাপ শিশুও উপর দেড় লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে। স্বৈরাচার বিদেশ থেকে ঋণর এনে লুটপাট করেছে। পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আইনের মুখমুখি করে তাদের শাস্তির ব্যবস্তা করতে হবে।”

সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আরোও বলেন, পুলিশ দিয়ে মানুষকে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে তেমনই সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে জনগণের সামনে এসে গুলি চালিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে যিনি গডফাদার ছিল তিনিও পালিয়েছে। তিনি ২০০০ সালেও পালিয়েছিল৷ কাপুরুষটা মুখে অনেক বড় বড় কথা বলে। যখন পরাজয় আসে তখন সবার আগে পালিয়ে যায়৷ কাপুরুষটা অস্ত্র হাতে নিয়ে জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। সেগুলা দৈনিক পত্রিকায় ও ভিডিও করা আছে। আমাদের দাবী অবৈধ অস্ত্র গুলা উদ্ধার করতে হবে। না হয় আমাদের জনজীবন আতঙ্কের মধ্যে ভীতির মধ্যে রয়েছি। সেই সন্ত্রাসীরা আবার আমাদের উপর যেকোন সময় আক্রমণ করতে পারে। তাদের দ্রুত্ব গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতি পরায়ন রাজনীতিবিদদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ফতুল্লায় স্বৈরাচার ছিল, মুখে উন্নয়নের অনেক কথা বলেছিল। ডিএনডি সহ বিভিন্ন প্রজেক্টেরর নামে টাকা এনেছে। সন্ত্রাসী গডফাদার সে নিজেই গল্পকরে বলেছে ফতুল্লায় ৫ টি ইউনিয়নের এতো হাজার কোটি টাকা এনেছি। স্বৈরাচার গডফাদার জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা কি করেছে তা খুজে বের করতে হবে। কাঙ্খিত উন্নয়ন ফতুল্লর মানুষ হারিয়েছে। এখানে হাজার হাজার শিল্প কারখানা সরকার রেভিনিউ পায়। বৈদেশিক মুদ্রা পায়। সেই অনুযায়ী এ এলাকার মানুষের উন্নয়ন নাই।”

কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মোঃ মঈনুল হোসেন রতন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ মন্ডল সঞ্চালনায় আরোও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি এড. আঃ আব্দুল বারী ভূঁইয়া, অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, মাজেদুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ কবীর প্রধান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সুলতান মাহমুদ মোল্লা, আলাউদ্দিন খন্দকার সিপন, মোঃ বিল্লাল হোসেন, এডঃ মাহমুদুল হক আলমগীর, মোঃ হাসান আলী, হাসান মাহমুদ পলাশ,মোঃ মন্টু মেম্বার, ফুল্লা থানা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সৈকত হাসান ইকবাল প্রমুখ।