বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ বিকেল ৩ টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সভার সূচনা করা হয়। সংগঠন কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি রীনা আহমেদ। মতবিনিময় সভায় মতামত ব্যক্ত প্রদান করেন সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি জাকির হোসেন, কবি কাওসার আক্তার পান্না, আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক সালমা ডলি, হোশিয়ারী শ্রমিক টুম্পা, এক্টিভ সোসাইটির সভাপতি মাসুদ রানা, সাংবাদিক আল-মামুন, মহিলা পরিষদের পক্ষে সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আনজুমান আরা আকসির, সাধারণ সম্পাদক রহিমা খাতুন, লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানারা বেগম, প্রমূখ। পরিচালনা করেন সদস্য ফাহমিদা আজাদ ও কবিতা আবৃত্তি করেন তিথি সুবর্ণা।
বক্তারা বলেন- প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করা হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সারা দেশব্যাপী এই পক্ষ পালন করে থাকে। এ বছরে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পক্ষ পালন করা হচ্ছে।
দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। এবছর প্রেক্ষাপট ভিন্ন ধরনের। গণতন্ত্রের কথা বলে দলীয় সরকারগুলো সব সময় দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। স্বেচ্ছাচারিতার ও প্রভাবশালীদের কারণে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। মৌলবাদী শক্তিগুলো যাতে মাথা ছাড়া দিতে না পারে, সে দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে, ছেলে মেয়েকে সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে। নারীর গৃহকর্মের মূল্যায়ন করতে হবে। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি জরুরী। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার বাস্তবায়ন দরকার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ৫৩ বছর ধরে সংগঠনটি বিভিন্ন ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলার নারী আন্দোলনসহ সকল জাতীয় আন্দোলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দূর্নীতি দমন ও বাক স্বাধীনতা ও জন নিরাপত্তা প্রদান, নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জেন্ডার সমতা, দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন, সচেতনতা বৃদ্ধি, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তি, সম্পত্তিতে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা, সিডও সনদের বাস্তবায়ন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে আজ পর্যন্ত আন্দোলন করে চলেছে। হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্টান সকল সম্প্রদায়ের এক ও অভিন্ন পারিবারিক আইন চালু করতে হবে। বিবাহ ও তালাক সংক্রান্ত আইন, সম্পত্তি আইন সব সম্প্রদায়ের এক হওয়া জরুরী। এভাবেই সংগঠনটি চ্যালেন্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সভায় জেলা, শহর ও পাড়া কমিটির সদস্যসহ ৭৪ জন বিভিন্ন পেশাজীবী নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।