নারায়ণগঞ্জে নদী-বন্দর পোর্ট এলাকায় ঐতিহ্যবাহী ৫ নং সারঘাট পূনরায় চালু হওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। জাহাজ ভর্তি সার আসাতে পূনরায় শ্রমিকেরা কর্মব্যস্ত হয়ে পরে। দীর্ঘ আট বছর পর সারঘাটে কর্মস্থলে ফিরে আসায় শ্রমিক ও পোর্ট এলাকায় ব্যবসায়ীদের হাস্যোজ্জ্বল দিন কাটছে৷
গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী সারঘাট পোর্ট এলাকাতে জাহাজ থেকে মালামাল লোড-আনলোড হওয়ায় শ্রমিকরা আনন্দিত হয়েছেন বলে একাধীক শ্রমিক জানিয়েছেন।
এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে আশার আলো দেখতে পেয়ে চা দোকানী ও ভাসমান খাবার দোকানীরাও উচ্ছ্বসিত হয়েছে।
শ্রমিক ও ক্ষুদ্র খাবার ব্যবসায়ীরা জানান, “দীর্ঘ ৮ বছর পূর্বে ঐতিহ্যবাহী এ সারঘাটে শত শত লোকসমাগম ছিল।
কিন্তু হঠাৎ জাহাজ আসা বন্ধ হয়েগেল। নারায়ণগঞ্জ এ পোর্ট এলাকায় ব্যবসায়ীরা চলে যেতে শুরু করলে এখানকার ৬-৭শ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। এর কারনে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে সার উঠা নামা করে। এছাড়া অবৈধভাবে সার উঠা-নামা করে মুন্সিগঞ্জ এর মোক্তারপুরে, ফতুল্লা আলীগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জে, নিতাইগঞ্জে। কিছু অসাধু চক্রের কারনে বন্দর পোর্ট সারঘাটি বন্ধ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। বিশ বছর যাবত এখানে আটশত শ্রমিকের কর্মস্থল ছিল। এই পোর্টে মাল না আসায় প্রত্যেক শ্রমিকের খুব কষ্টে দিনযাপন করতে হয়েছে আমাদের। এছাড়া এই সুযোগে রেলওয়ের প্রয়োজনে অনেক জায়গা নেওয়া হয়ে গেছে।”
তারা আরোও বলেন, “আমরা শুনেছি এই পোর্ট এলাকায় নতুন ইজারাদার ইজারা নিয়েছে বলে সারভর্তী জাহাজ আসতে শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নদি-বন্দর নৌ পরিবহন (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে এবং আইনগত ব্যবস্থা নিলে মুন্সিগঞ্জ মোক্তারপুরে, ফতুল্লায় আলীগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, নিতাইগঞ্জে অবৈধভাবে যে সার উঠা-নামানো হয় তা বন্ধ হবে। এতে নদি-বন্দর পোর্ট এলাকা পূনরায় আগের মত মাল ভর্তি জাহাজ ও ব্যবসায়ীরা আসবে লোকসমাগম হবে আমরা শ্রমিকেরা পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দর দিনযাপন করব এবং সরকারের কোষাগারে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং একটি পক্ষ চাচ্ছেনা ৫ নং সার ঘাট পূনরায় সচল হউক।”
এবিষয়ে নদি-বন্দর পোর্ট এলাকার বর্তমান ইজারাদার মোঃ সাইদুর রহমান বাবু বলেন, “দীর্ঘ বছর পরে ৫নং সার ঘাট আমরা পূনরায় চালু করতে সক্ষম হয়েছি। আবারও এঘাটে শ্রমিকেরা তাদের কর্মস্থলে ফিরে এসেছে। যেহেতু এঘাট দুর্বল তাই প্রয়োজনে আমরা ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে আমরা বাঁশের জেটি নির্মাণ করে দেব। একটি কুচক্রি মহল এই ঘাটকে অচল এবং বন্ধের পায়তারায় লিপ্তে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এতে আমাদের সরকারে আর্থিক ক্ষতি সাধণ হচ্ছে।”
নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক (বওপ) মোবারক হোসেন মজুমদার জানান, “আমাদের জেটি দুর্বল হওয়াতে পোর্ট এলাকায় মালামাল উঠানামা বন্ধ রয়েছে ৪ বছর যাবত। নারায়ণগঞ্জ ডিভিশনের আওতাধীন মাছঘাট, সারঘাট এবং ৫নং ঘাটের স্টীল জেটির মেরামত কাজ চলছে। এগুলা সম্পূর্ন হলে আগের অবস্থা পোর্ট এলাকা ফিরে পাবে এবং একটি পক্ষ চাচ্ছেনা ৫ নং সার ঘাট পূনরায় সচল হউক।”