বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য সচিব তাইজুল ইসলাম শামীমকে আটকের প্রতিবাদে সড়কে ট্রাক ফেলে সড়ক অবরোধ করেছে ট্রাক মালিক সমিতির নেতাকর্মী ও শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শহরের মন্ডলপাড়া ট্রাক ইস্টার্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন তারা। এসময় শামীমকে মুক্তি না দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করা হবেনা বলে জানান শ্রমিকরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সড়কে এলোপাথারি ট্রাক ফেলে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকেরা।
এর আগে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সুজন ও শামীমকে হত্যা মামলা গ্রেপ্তার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
অবরোধ কালে শ্রমিক নেতারা জানান, শ্রমিক নেতা সুজন ও শামীম দুইজনই অফিসে বসা ছিল, প্রশাসনের লোক এসে বলেন সদর থানার ওসি সাহেব চায়ের দাওয়াত দিয়েছে। পরবর্তীতে আমরা সদর থানায় গিয়ে দেখি আটককৃতরা নেই, রয়েছে ফতুল্লা মডেল থানায়। তারা দুজনই বলেছেন আমরা বিএনপির সমর্থক৷ সুজন তার কাছে থাকা ছবি ও ভিডিও দেখালে তাকে ছেড়ে দিয়ে শামীম ভাইকে আটক করা হয়।
তারা আরোও বলেন, ৫ আগস্টের পরে আমরা একটি আহ্বায়ক কমিটি করি। আহ্বয়ক সুজন এবং সদস্য সচিব শামীম। তারা দু’জনই বিএনপির সাথে জড়িত। এঘটনাটি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু ভাই করিয়েছেন। বিএনপির দলের হয়ে এ দলের কর্মীদের ক্ষতি সে কিভাবে করে? আমরা টিপুর বহিস্কারের দাবী জানাই।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় একটি হত্যা মামলায় শামীম নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির জানান, আমরা চেষ্টা করছি তাদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে। আমার থানায় কোন আসামি গ্রেফতার নেই, শুনেছি ফতুল্লা মডেল থানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেহেতু এটি সদর থানার এলাকাধীন তাই এখানে বিক্ষোভ অবরোধ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ট্রাক ড্রাইভার মালিক সমিতির আহবায়ক সুজন মিয়া জানান, একজন ট্রাক ড্রইভার ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকে এভাবে ধরে নিয়ে হেনস্থা করা ঠিক হয়নি। আপনারা জানেন টিপুর (মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু) সাথে জোহা পরিবারের সম্পর্ক ছিল। সে ট্রাক ইস্টার্ন দখল করতে চেয়েছিল। সেই সূত্রে শামীম এর সাথে ঝমেলা হয়। ৭শ শ্রমিক এ আহ্বায়ক কমিটি করে দিলে এডঃ টিপুসহ তার নেতৃত্বে ৫/৬ জন দখলের পায়তারা করে। ৫ই আগস্টে সবাই আনন্দ মিছিলে ব্যস্ত থাকে কিন্তু টিপু ট্রাক ইস্টার্নে শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস তালা মারে। সেই টিপু বিএনপির একজন কর্মীকে এভাবে হেনস্তা করছে, এটা মেনে নেয়া যায় না। আমাদের দাবী ২৪ ঘন্টার মধ্যে টিপুকে বহিষ্কার না করা হলে আমরা নারায়ণগঞ্জে হরতাল ডাকবো।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি পরিপূর্ণভাবে মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যে বা যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবার হয়ত বাদী হতে পারে। আমি কেনো এ মামলার বাদী হব। আমি পুলিশের কোন কর্মকর্তা নই এবং আমাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় শামীম নামে ঐ ব্যক্তি আসামি নন। আমি কেন তাকে গ্রেপ্তার করাতে যাব। তারা গোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। বিগত ১৬ বছর তাকে মাঠেও দেখা যায়নি। এ নামে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে কেউ নেই আমি যতটুকু জানি। এছাড়া কোন মিছিল মিটিংও করতে দেখি নাই। সে বিএনপির কোন অঙ্গসংগঠনের নেতা বলুক। বিএনপির রাজনৈতীক ফায়দা হাসিল করতে সে চায়।