খ্রিষ্টান ধর্মবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড় দিন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে উৎসবকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোন ধরনের শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জেলা খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশনের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানান । এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের ব্যাপ্টিস্ট গির্জাকে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছরের মতো এবারো আমার দুটি গির্জায় আলোকসজ্জা করেছি। আগামীকাল সকাল ৯টায় আমাদের প্রার্থনা হবে এবং ১১টায় কেক কাটা হবে। এর মাঝে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর্ব চলবে। আমাদের সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে।
তিনি আরও জানান, আমাদের কোনো শঙ্কা বা দুশ্চিন্তা নেই। এসব কথা রাজনৈতিক। আমি মনে করি আমাদের কোনো ধরনের শঙ্কা নেই বরং উৎসবমুখর পরিবেশ আছে। অনেকে এসব বললেও আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের সবাই আদর করে, সম্মান করে, সহযোগিতা করে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা এসেছিলেন, পাশে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসেছিল। তারা এসে ডোনেশন করে গেছে। বিএনপি খোঁজখবরও নিয়েছে। এবার মেয়র না থাকায় গির্জায় রঙ করা হয়নি।
সকালে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবকে ঘিরে সাজসজ্জায় ব্যস্ত রয়েছেন সেখানকার দায়িত্বরত সবাই। এরই মধ্যে সাজানো হয়েছে গোশালা ও ক্রিসমাস ট্রি। করা হয়েছে রঙ, প্রধান ফটকের বাইরে তৈরি হয়েছে তোরণ, প্রার্থনা কক্ষও সাজানো হয়েছে নানা সাজে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহর ছাড়াও ফতুল্লার সস্তাপুর, পাগলা, দেলপাড়া, বন্দরের লক্ষ্মণখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড, সদর থানার গোগনগর এলাকায় খ্রিস্টানদের বাস। তাদের বেশির ভাগই চাকরিজীবী। বিশেষ করে গার্মেন্টস, বায়িং হাউস, চায়নিজ রেস্টুরেন্ট ও বিউটি পার্লারে কর্মরত। নারায়ণগঞ্জে ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট ছাড়াও খ্রিস্টানদের কয়েকটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জে কোনো গির্জা নেই। তারা বাসায়, অফিসে অথবা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে বড়দিন উপলক্ষে অস্থায়ী গির্জা তৈরি ও ক্রিসমাস-ট্রি সাজিয়ে থাকে।
পিন্টু পলিকাপ পিউরিফিকেশন বলেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দুটি গোত্রের (ক্যাথলিক ও ব্যাপ্টিস্ট) জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরে দুটি গির্জা রয়েছে। ক্যাথলিকদের জন্য শহরের ১৩৫, বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গির্জা ও ব্যাপ্টিস্টদের জন্য সিরাজউদ্দৌলা সড়কে ব্যাপ্টিস্ট গির্জা। ব্যাপ্টিস্ট গির্জাটি ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রেভারেন্ড রামচরণ ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। অন্যদিকে ১৯৪৯ সালে ইতালিয়ান ফাদার জন সাধু পৌলের গির্জাটি প্রতিষ্ঠা করেন।