জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য সচিব তাইজুল ইসলাম শামীমের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে সদর থানাধীন শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর মোঃ আবুল হোসেন মিজি হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ৮ই জানুয়ারি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সামছুন নূর বাধঁন জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
এতে তাইজুল ইসলাম শামীমের পক্ষের আইনজীবী সামছুন নূর বাধঁন জানান, আমরা সি আর মিস করেছি। জামিন চাওয়া হলে জামিন নামঞ্জুর করেদেন বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
ফতুল্লা থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোঃ আবুল হোসেন মিজি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত তাইজুল ইসলাম শামীমের স্ত্রী ক্ষোভ নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না! আজকে আমার স্বামীর জামিন হওয়ার কথা ছিল। আমরা বাদীর সাথে কথা বলেছি! বাদী বলেছে আমরা এব্যাপারে কিছুই জানিনা! এড. আবু আল ইউসুফ টিপু তার কথা বলেছে। সে নাকি এ মামলা করেছে! যা বলার সেই বলে। এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব। সে ইস্টান দখল করতে না পেরে এ মামলা দিয়েছে।
এবিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য ও জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন যুগ্ম আহ্বায়ক সুজন মাহমুদ বলেন, বিএনএফ এর নামধারী নেতা এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু নিতাইগঞ্জ ট্রাক, ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস দখলে নেওয়ার চেষ্ঠা করে। তাইজুল ইসলাম শামীমের বাধা দেওয়ায়কে কেন্দ্র করে আজ শামীম এর এই অবস্থা। তারই ধারাবাহিকতা সুকৌশলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার সাথে শামীমকে ৬৭ নম্বর অভিযুক্ত করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। আজ তার জামিন হওয়ার কথা ছিল তা হয় নাই। আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন করব। থানার ওসি সাহেব ও যমুনা টিভির সাংবাদিকের কাছে প্রমান আছে, আমরা বারবার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছি এবং সেই নামধারীর নেতার বহিস্কার চেয়েছি। জোহা পরিবারের অনেক সন্ত্রাসীরা আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং শান্ত নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
তিনি আরোও বলেন, কেউ আবু আল ইউসুফ খান টিপুর মনের মতন হলেই ভালো আর নাহলে মামলা। টিপুর যে বিরোধীতা করে তাকেই সে মামলায় জড়িয়ে দেয়। আমি নিজেই সেই সংশয়ে রয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উচ্চ মহলের ব্যাক্তিদের আহ্বায়ন করছি টিপুর নোংরামি ও মামলা নেওয়া থেকে সাবধান থাকবেন। তদন্ত ছাড়া কোন মামলায় যেন নিরীহ ব্যক্তিদের ফাসানো না হয়। তদন্ত ছাড়া টিপুর কথায় আজ অসুস্থ্য তাইজুল ইসলাম শামীম কারাগারে। বিগত দিনে যারা হামলা মামলার শিকার হয়েছেন তাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন টিপু। এমন কোন জায়গা নাই যে তার মাতাব্বরি না চলে এবং হুঁশিয়ারি সমিতির সদস্য না হয়েও সেখানে মাতাব্বরি চালায়। টিপু যদি প্রকৃতঅর্থে বিএনপিকে ভালোবাসতো তাহলে বিএনএফ দল করতো না। ২০১৩ থেকে ২৯১৬ সালে তার বিরুদ্বে কোন মামলা ছিল না। ১৯ই আগস্ট শামীম ওসমান শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। সেই সময় সিটি করপোরেশনে হামলার মামলাটি বিএনপির অনেকেই খেয়েছেন। বিএনপির নেতা হাসান আহম্মেদ অসুস্থ্য বিছানায় ছিল তিনিও মামলার আসামী। অথচ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হয়েও কোন মামলা হয় নাই কারন সে ওসমান পরিবারের দালাল৷
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, এ.কে.এম শামীম ওসমানের নির্দেশে গত ১৯ জুলাই ২০০/২৫০ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী অত্যাধুনিক আগ্নোয়াস্ত্র, রিভালবার, পিস্তল, কাটা রাইফেল, রাম দা, চাপাতি, হকিস্টিক, চাইনিজ কুড়াল, তলোয়ার সহ সজ্জিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী নিরিহ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর ঝাপাইয়া পড়ে। ককটেল বিস্ফোরণ এবং অনরবরত গুলি বর্ষন করিতে থাকে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের তাহাদের সুষ্ঠ ও ন্যায় দাবী থেকে বিতারিত করার জন্য গুলি বর্ষন করে। ঘটনাস্থল হইতে উৎখাত করার চেষ্টা করে। আন্দোলনে নিহত মোঃ আবুল হোসেন মিজি স্থান অতিক্রম করাকালে কুখ্যাত সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে বাদীনির ছেলেকে লক্ষ করিয়া গুলি করে এবং মোঃ আবুল হোসেন মিজির নাভির উপর পেটে গুলিবিদ্ধ হয়।
তাহাকে প্রো-এ্যাক্টিভ মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটালে নিয়া যাওয়া হয়, অতঃপর বাদীনির ছেলের অবস্থার অবনতি হইলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে সেখানে মৃত্যুবরণ করে।