আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সাখাওয়াত-টিপু। আলীরটেকে আওয়ামী লীগের নেতা মান্নান মেম্বারের বাড়িতে মহানগর বিএনপির নেতাদের দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের মাঝে ক্ষোভও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতি মধ্যে তাদের আওয়ামী দোসর বলে আখ্যায়িত করেছেন নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতারা।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কুড়ের পাড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৫ তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ ও দিনব্যাপী আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে স্কুল সংলগ্ন আওয়ামী লীগের নেতা মান্নানের বাড়িতে মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু নফল রোজা ভাঙ্গতে যান। তা নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের মাঝে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে।
আলীরটেক এলাকার নুরুল ইসলাম এর ছেলে মেম্বার আব্দুল মান্নান ভেন্ডার ও মান্নানের বড় ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন।
স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা যায়, মান্নান মেম্বার আওয়ামী লীগের নেতা ও আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক এবং শামীম ওসমানের ঐ অঞ্চলের খুব আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। মান্নান ও জামাল দুই ভাই আজমেরী ওসমানের সাথে গভীরভাবে গড়ে তোলেন সাম্রাজ্য। আলীরটেক ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সাথে জোট বেঁধে বিএনপির নেতা কর্মীদেরকে একের পর এক মামলা দেওয়া হয় এবং মামলার ভয়ে বাড়ি ঘর ও স্বজনদের ছেড়ে পালিয়ে থাকতে বাধ্য করা হতো।
আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও সহ-সভাপতি জামাল সরদার ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, প্রয়োজনে পদ-পদবী ছেড়ে বিএনপির কর্মী হয়ে থাকবো তারপরও আওয়ামী লীগের দোসরদের সাথে আতাত করা বিএনপির নেতাদের সাথে রাজনীতি করব না। আমরা ইউনিয়ন বিএনপির পদধারী নেতা আমরা মহানগর নেতাদের ইফতার করাতে পারব না সেই অক্ষমতাতো আমাদের নেই। এটা দুঃখজনক ও লজ্জাজনক কাজ করেছে। মান্নান ও জামালসহ নৌকার চেয়ারম্যান জাকিরকে দিয়ে আমাদের অসংখ্য মামলা দিয়ে বাণিজ্য করেছে। আমাদের বিএনপির নেতারা সেই স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসরদের বাড়িতে গিয়ে ভূরিভোজ করে এটা নিন্দনীয় কান্ড করেছে নেতারা। সাখাওয়াত -টিপু এ দোসরদের বাঁচাতে এবং বক্তব্যে সাফাই গেয়ে তাদের বাড়িতে ভূরিভোজ করেছেন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের আস্থাভাজন নৌকার প্রতীকের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন এর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন।
নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের পক্ষ নিয়ে মঞ্চে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বক্তব্যেও স্পষ্ট বলেছেন কিছু দুষ্কৃতিকারী আলীরটেক ইউনিয়নের একজন ভালো জনপ্রতিনিধিকে ছাত্র-জনতার হত্যা মামলা দিয়েছে। আমরা এবিষয়ে দেখব বলে মন্তব্য করা হয়।
পরে এনিয়ে আবু আল ইউসুফ খান টিপু সাংবাদিকদের সাথে দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন এবং ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের প্রতিবাদ ভিডিও ও লাইভ দেওয়ায় হুমকি স্বরূপ কথা বার্তা বলেন।
এনিয়ে মহানগর বিএনপি সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুজন মাহমুদ বলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বিষয়ে আমি আগে থেকেই সবাইকে অবগত করেছি। কিন্তু বিএনপি কর্ণধার যারা রয়েছে তারা কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বলেই আজকে দোসরদের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছে।
এবিষয়ে জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক বলেন, দেশে নৈরিজ্য করে ছাত্র- জনতার মধ্য দিয়ে টিকে থাকতে চেয়েছিলেন তারা। সেই দোসরদের বাড়িতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান – আবু আল ইউসুফ খান টিপুর মত লোকেরা খুনি হাসিনা ও শামীম ওসমানের নীল নকশা বাস্তবায়নের কাজ করছে তারা। এবিষয়ে অতি দ্রুত বিএনপির ভারপাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দরা ব্যবস্থা নিবেন ও তাদের বহিস্কার করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে পুনঃরুদ্ধার করবেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতারা জানান, আওয়ামী ও শামীম ওসমানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন তারা। এবং আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের বাচাঁতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় আশ্রয়-পশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। এবং তাদের কথা সাখাওয়াত -টিপু বাস্তবায়ন করে নিরিহ ব্যবসায়ীদেরকে ছাত্র-হত্যা মামলা দিয়ে বিপদগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তাদের দাবীকৃত টাকা না পেলে দেওয়া হয় মামলা।