নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তারা গুলিবর্ষণ করেছে। এতে সাংবাদিক সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতরা হলেন- গণমাধ্যমকর্মী তোফাজ্জল হোসেন সহ ১০ জন। তোফাজ্জল হোসেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী। অপর ৯ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া উভয়পক্ষের গুলিবর্ষণের সময় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ইপিজেডের ইউনিভার্সেল নামের একটি গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর ও রুহুল আমিন নামের এক বিএনপি নেতার অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এই দ্বন্দ্বের জেরে বিকেল ৫ টার দিকে রুহুল আমিন সহযোগীরা ইপিজেডের ভেতরে অবস্থান করে রাকিবুর রহমান সাগরের সহযোগীদের কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে সাগর গ্রুপের অনুসারীরা একত্রিত হয়ে পাল্টা হামলা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় তোফাজ্জল হোসেন নামে এক গণমাধ্যম কর্মীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এছাড়া তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের ঘটনার দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি জাকির হোসেনের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করতে গেলে ওরা আমাদের উপরে হামলা করে। এ সময় তারা সাংবাদিক তোফাজ্জলকে মারধর করে। ওদের হাতে দেশিয় অস্ত্র ছিল। হামলার এক পর্যায়ে ওরা আমার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় সাংবাদিক সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। তবে আমাদের উপর হামলাকারীরা কোন পক্ষের লোক তা জানতে পারি নাই।
আহত গণমাধ্যমকর্মী তোফাজ্জল প্রসঙ্গে তার সহকর্মী মোস্তাক শাওন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় তোফাজ্জল আহত হয়েছে। সে স্থানীয় একটি মিডিয়ায় কাজ করে। ধারণা করা হচ্ছে, তার কোমড়ের হাড় ভেঙে গেছে। এখন তাকে নিয়ে শহরের ৩শ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতারে নেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর বলেন, ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেলে আজ বিকেলে রুহুলের নেতৃত্বে তার অনুসারী সাজ্জাদ, পাকনা বাবু, শাকিল সহ প্রায় শতাধিক লোকজন আমাদের লোকজনের উপরে হামলা চালিয়েছে। এসময় ছাত্রদল নেতা মোহন, মানিকসহ ৪-৫জনকে তারা কুপিয়ে জখম করে। পরে তারা আদমজীর পুরান থানার সামনে ৩-৪টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়ে আমাদের লোকজনদের এলাপাথাড়ি মারধর করে ও গুলি ছোড়ে। এছাড়া আরও কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কিনা তা জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে রুহুল আমিনের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এ সময় কতজন আহত হয়েছে তা জানা নেই। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।