বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষণে নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটুর সহযোগী ও ওসমান পরিবারের অন্যতম চিহ্নিত সন্ত্রাসী এস এম রানা’কে ফতুল্লা থানা করা ককটেল বিস্ফোরণ ও হত্যা চেষ্টার মামলা তালিকাভুক্ত অভিযুক্ত হাজতী আসামীকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
রবিবার ( ৯ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনউদ্দিন কাদির এর আদালত রিমান্ড শুনানি শেষে ককটেল বিস্ফোরণ, পিস্তল, রাইফেল, বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র ও হত্যার চেষ্টার দায়ে চিহ্নিত অপরাধী এস এম রানা নামের এক আসামীকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত জিআরপি পুলিশ সূত্রে জানাযায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আসামীকে ১০ দিনের ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত হাজতী আসামী এস এম রানাকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ প্রদান করেন।
হত্যাসহ ককটেল বিস্ফোরণ, পিস্তল, রাইফেল, বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র ও হত্যার চেষ্টার দায়ে বিভিন্ন থানার করা মামলার তালিকাভূক্ত আসামী ১৮নং ওয়ার্ডের ৫৩/৩ এস.জি. রোড তামাকপট্রি এলাকার কমল সরদার ওরপে ড্রাইভার কমল সরদারের ছেলে চিহ্নিত অপরাধী এস এম রানা(৪৫)।
এর আগে আত্মগোপনে থাকার পর ১৯ ফেব্রুয়ারী এস এম রানা পালিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে আটক করে পিবিআই। পিবিআই সদর থানার দুইটি হত্যা মামলায় যথাক্রমে ৩ দিন রিমান্ড নেয়। পরে সদর থানা ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এসএম রানা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ১৬ জুলাই থেকে ০৫ আগষ্ট পর্যন্ত ছাত্র জনতাকে হত্যায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছিল বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ থেকে রানাকে হামলায় জড়িত থাকার সু-স্পষ্ট থাকার প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই ও বিভিন্ন থানার পুলিশ ।
থানা সূত্রে জানা যায়, গতবছর ৪আগস্ট সারা দেশে ছাত্র-ছাত্রীদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের উপর গ্রেফতারকৃত আসামীসহ এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামী এবং অজ্ঞাত নামা ২০০/৩০০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, রিভলবার, সেমি অটোমেটিক মেশিনগান নিয়ে ফতুল্লা মডেল থানাধীন নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জেলা পরিষদ সংলগ্ন সূত্রে বর্নিত মামলার বাদী সহ হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করা কালে উল্লেখিত আসামী এস.এম রানা ও শাহাদত হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জন অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, রিভলবার, সেমি অটোমেটিক মেশিনগান, শটগান, রামদা, চাপাতি, হকিষ্টিক, চাইনিজ কুড়াল, তলোয়ার সহ সজ্জিত হযে – কমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায় দাবী থেকে বিতাড়িত করার জন্য শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালাইয়া ও অনবরত গুলি বর্ষন করতে থাকে ও বোমা বিষ্ফোরন ঘটায় এবং ঘটনাস্থল হইতে উৎখাত করার চেষ্টা ত্রাসের সৃষ্টি করে।
এছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীদের ছোরা গুলিতে মামলার বাদী হৃদয় এর মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত জখম হয়। বাদী আহত অবস্থায় প্রায় ৩০ মিনিট রাস্তায় পড়ে থাকার পর বাদীর বড় ভাই ফজলু মিয়া • লোকজনের সহায়তায় তাহাকে গুরুতর জখম প্রাপ্ত অবস্থায় উদ্ধার করিয়া নারায়নগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসা করায়।
এছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সাবেক এমপি এ.কে. এম শামীম ওসমান “ও তার ছেলে অয়ন ওসমান এর ছাত্র ছায়ায় থেকে নারায়নগঞ্জে জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, গুম ইত্যাদি বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াইত। তার ভয়ে এলাকার লোকজন মুখ খুলতে সাহস পাইত না। এই মামলার ঘটনার দিন আসামী ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকিয়া ছাত্র জনতার উপর নির্যাতন নিপীড়ন সহ বোমা বিস্ফোরণ প্রকাশ্যে গুলি করেছে যা যথেষ্ট সাক্ষ্য, প্রমান পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়াটি প্রকাশ হয়েছে। বর্নিত আসামী এসএম রানা ও শাহাতদ হোসেন দ্বয় ৫ আগস্ট/২৪ পর আত্মগোপনে চলে যায়। অত্র মামলা একটি চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত মামলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাদের এলোপাথালি ভাবে ছোড়া গুলিতে নয়ামাটি এলাকায় ১৯ জুলাই রিয়া গোপ নামক এক শিশু গুলিবৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও আরোও অনেক নিরিহ লোক তাদের গুলিতে হিহত ও আহত হন। একপর্যায় ১৯শে জুলাই চাষাড়া, ডিআইটি, ঢাকা – নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সহ সাইনবোড ও শিনির আখড়ায় এ গণহত্যায় পরিচালিত করেন শামীম ওসসমানের নেতৃত্বে এ গুলিবর্ষণ করে। পরে এস এম রানা আত্মগোপনে থেকে কথিত “ক্রিকেট বোড”বিসিবির সভাপতির ফারুক আহমেদ এর ব্যবসায়ীক পাটনার হওয়ায় ধরপাকড়াওর থেকে দূরে থাকে এস এম রানা। বুক ফুলিয়ে যাতায়ত করতেন তার বাড়িতে। এছাড়াও ফারুক আহমেদ এর ছত্র-ছায়ায় কথিত বিএনপির নেতাদের সাথে সম্পর্ক গড়েতুলে বানিয়ে ফেলেন ব্যবসায়ী পাটনার এবং বিভিন্ন এস এম রানার বিরুদ্ধে থাকা লোকদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার হত্যা ও বিস্ফোরণ মামলা তেওয়া হয়।