নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় কাশিপুর ইউনিয়ন কাশীপুর মধ্যপাড়া এলাকায় আলোচিত পাভেল হত্যাকান্ডের ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামী মায়সার আহম্মেদ বাবু ও সহযোগী জুবায়ের আহম্মেদ অরফে জুব নামে দুই আসামীকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
রবিবার(২০ এপ্রিল ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলাম চৌধূরী এর আদালত রিমান্ড শুনানি শেষে হোসিয়ারী শ্রমিক পাভেল হত্যা মামলার প্রধান আসামী মায়সার আহম্মেদ বাবু’কে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এককী মামলায় পৃথক ভাবে ১৯ এপ্রিল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় জুবায়ের আহম্মেদ ওরফে জুব’কে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত জিআরপি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আসামীকে সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে প্রধান আসামী মায়সার আহম্মেদ বাবুকে ৫ দিন ও পৃথকভাবে জুবায়ের আহম্মেদ অরপে জুব’কে তিনদিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ প্রদান করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামী হলেন, নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার কাশীপুর মধ্যপাড়া এলাকার মৃত ফিরোজ আহমেদ মতিন মিয়ার ছেলে মায়সার আহমেদ বাবু (২৯) ও তার সহযোগী বন্দর নবীগঞ্জ উত্তর পার্ট (ঘাট সংলগ্ন) এলাকার জুয়েল মিয়ার ছেলে জুবায়ের আহমেদ ওরপে জুব(২৮)।
এজহারে অভিযুক্ত আসামীরা হলেন,ফতুল্লা কাশিপুর ইউনিয়ন মধ্যপাড়া সম্রাট হল সংলগ্ন মৃত ফিরোজ আহম্মেদ মতিনের ছেলে মায়সার আহমেদ বাবু (২৯), কাশিপুর কাউন্সিল অফিস সংলগ্ন মৃত আলমাছ মিয়া ছেলে মোঃ আলী (২৮), কাশিপুর শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকার মোঃ মাইনুদ্দিনের ছেলে মোঃ রয়েল (২৭), বন্দর নবীগঞ্জ উত্তর পার্ট (ঘাট সংলগ্ন) এলাকার জুয়েল মিয়ার ছেলে জুবায়ের আহমেদ ওরপে জুব(২৮), বন্দর নবীগঞ্জ ঘাট সংলগ্ন এলাকার বিশুমোঃ মৃদুল (৩০), কাশিপুর মধ্যপাড়া, সম্রাট হল সংলগ্ন মৃত ফিরোজ আহম্মেদ মতিন স্ত্রী ও মায়সার আহমেদ বাবুর মা শাহিদা ফিরোজ (৪৬) সহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদীনি ছোট ছেলে পাবেল (৩০) তার বাড়ীর পাশে জুম্মন হোসিয়ারীতে ওভারলক মেশিন অপারেটর পদে চাকুরী করতো। অত্র মামলার এজাহার নামীয় আসামী মায়সার আহমেদ বাবু এলাকায় মাদক ব্যবসা, হত্যা, কিশোগ্যাং লিডিং সহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটন করিয়া থাকে এবং এলাকায় এই অপরাধ সংঘটন কারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা ও পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী ও খারাপ প্রকৃতির লোক। তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে আসামীরা এলাকায় মাদক ব্যবসা পারিচালনা করে থাকে। আসামী শাহিদা ফিরোজ এর হুকুমে এজাহার ভূক্ত আসামীগণ সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আসামীরা বাদীনির ছেলেকে চাকুরী ছাড়িয়া তাহাদের = সাথে মাদক ব্যবসা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বাদীনির ছেলে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান সহ হত্যা চেষ্টা করে আসিতেছিল।
এছাড়া গত ৩০ এপ্রিল চাঁন রাত্রি হওয়ায় ভিকটিম পাবেল চুল কাঁটার জন্য ১ং আসামী মাইসার আহমেদ বাবুর বাড়ীর সামনে দিয়ে সেলুনে যাওয়ার পথে ৬নং আসামী রাসিদা ফিরোজ এর হুকুমে উল্লেখিত সহ অজ্ঞাতনামারা বাদীনির ছেলেকে ডাক দিয়ে মামলার প্রধান আসামী মায়সার আহমেদ বাবু’র বাড়ীর ছাদের উপর নিয়া পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাদীর ছোট ছেলে পাবেল (৩০)কে এজাহার নামীয় সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন পাবেলকে ঝাপ্টাইয়া ধরে এবং মাইসার আহমেদ বাবু তাহার হাতে থাকা পিস্তল দিয়া বাদীর ছেলের বুকের ডান পাশে গুলি করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
এছাড়া আরোও উল্লেখ্য রয়েছে, গত ৩১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন ভোর রাত্রে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামীরা বাদীর ছেলেকে ছাদ থেকে নিচে নামাইয়া প্রধান আসামী বাবুর বাড়ীর সামনে ফালাইয়া রাখে। পরে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে যাওয়ার পথে পাবেলকে দেখে গুরুত্বর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় একই দিন বিকালে
কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা পর মৃত বলে ঘোষনা করে। মৃত্যুর পূর্বে পাবেল ভিডিও জবানবন্দি দিয়ে যান।