“গ্রিন এ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ” কর্মসূচির আওতায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল-এর সেবার মানোন্নয়ন ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগে রায়হান বেপারী নামের এক ভুক্তভোগী ব্যাক্তির বক্তব্য তুলে ধরা হয় মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাব এর বিরুদ্ধে। এসময় এলাইড হাসপাতালের বিষয়েও মৌখিকভাবে উল্লেখ্য করা হয়। কিন্তু এসমস্ত হাসপাতালের হয়রানি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সিভিল সার্জন টেবিল পর্যন্ত পৌছায় না, সেই অভিযোগ জেনে আমলে না নিয়ে পাশ কেটে জান সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম মুশিউর রহমান (বাবু)।
মঙ্গলবার (২৯শে এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসভায় হাসপাতাল ও ডাক্তারদের অনিয়ম গুলা তুলে ধরেন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা।
এতে ভুক্তভোগী রায়হান বেপারী সকলের সামনে বলেন, আমি সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ দিয়ে আসি কিন্তু তা আমলে নেননা কর্মকর্তারা, বিচার দাবিতে এখনও তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কিন্তু তারা জানায় আমরা দেখছি। সরাসরি সিভিল সার্জন পর্যন্ত স্থানীয়রা অনেক অভিযোগ দাখিল করলেও ব্যাক্তি মালিকানা হাসপাতাল ও ডাক্তারদের বিরুদ্বে কোন রূপ ব্যবস্থাগ্রহণ করেন নাই সিভিল সার্জন।
এমন কথায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে অনেকেই বলছেন এ অনিয়মের পিছনে সিভিল সার্জনের কি সম্পৃক্ততা থাকতে পারে? তানাহলে ব্যাঙের ছাতার মতন গজে উঠা অনেক বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনিয়মের বিষয়ে কেনো সে ব্যবস্থা নিবেন না? কেনো তার হাতে অভিযোগ পৌছায় না? রায়হান বেপারীর বক্তব্য সিভিল সার্জন কেনো আগে জানলেন না? ভূক্তভূগী রায়হান বেপারীর বক্তব্যের সময় জিহ্বা কামড় দিয়ে মাথা নাড়িয়ে অভিযোগ না পাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন। এছাড়া বেসরকারী হাসপাতাল ও প্যাথলজিতে গিয়ে অনেক নিরীহ মানুষ অসহায় হয়ে কষ্টে অর্জিত অর্থ শেষ করেছেন। কিন্তু সিভিল সার্জনকে অভিযোগ দিলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা নেন না, রহস্যময় সিভিল সার্জন!
সভাস্থলে জেনারেল ভিক্টোরিয়া ও ৩শ শয্যা হাসপাতালের কতৃপক্ষ ঘটনা সত্য বললেও জেলা সিভিল সার্জন কোন প্রকার মন্তব্য করেন নাই ডা. আ.ফ.ম মুশিউর রহমান (বাবু)
প্রসঙ্গত গত ৭ই এপ্রিল রায়হান বেপারী মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাব এর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করেন সিভিল সার্জন বরাবর।
অগিযোগে তিনি উল্লেখ্য করেন বিগত ৩ই এপ্রিল আমার স্ত্রীর সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় ব্যাথা অনুভব করলে খাঁনপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে যাওয়ার পর ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত ডাক্তার খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের গাইনী ডাক্তার পঞ্চমী গোস্বামী কাছে পাঠান। ডাক্তার পঞ্চমী গোস্বামী আমার স্ত্রীর গর্ভের বাচ্চার অবস্থা জানার জন্য আলট্রা করাতে বলেন। তার কথা মতন আমার স্ত্রীকে মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসাঁ ল্যাব এ যাওয়ার পর ঐখানের কর্মরত লোকজন, নার্স, ডাক্তার আলট্রা না করে বলে বাচ্চা অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমার স্ত্রীকে ডাক্তার দ্বারা ভালো মানের সেবা দিবে বলে আশ্বস্থ করে। কিন্তু তারা তাদের কথায় ব্যর্থ হন এবং আমার সন্তানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪ই এপ্রিল অন্যত্র নিতে বলে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র নিতে বাধ্য করে। তাদের চিকিৎসার অবহেলার কারনে বর্তমানে আমার সন্তানের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
রায়হান বেপারী সভা কক্ষে আরোও বলেন, তারা আমার স্ত্রীকে আলট্রা না করিয়ে বলে আপনার আলট্রার টাকা বাচিয়ে দিলাম অথচ ১২শ টাকার আলট্রা না করে আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করিয়েছে। স্ত্রীর ডেলিভারি সময় আরোও দের মাস ছিল। তারা আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপারেশেন করিয়েছে।
সিভিল সার্জন অভিযোগের বিষয়ে কেনো জানলেন না। কেনো ব্যবস্থা নিলেন না এবিষয়ে নারায়য়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম মুশিউর রহমান বাবু মুঠো ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার হাতে এখন পর্যন্ত রিপোর্ট পৌছায় নাই। সে ডিসির বরাবর ইয়ে করেছিল। আমার দপ্তর পর্যন্ত পৌছায় নাই। আমি বলেছি ফটোকপিটা দিয়ে যেতে বিষয়টা তদন্ত কমিটি করে দেখবো।
আপনার দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার রিসিভ কপি রায়হান বেপারীর কাছে রয়েছে এমন প্রশ্নের সাথে সাথে সিভিল সার্জন ফোনের সংযোগটি কেটে দেন।