নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা আমলী আদালতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী মো. আব্দুল বারী ভূইয়া।
বৃহস্পতিবার ৮ মে সকালে ফতুল্লা আমলী আদালত, সিনিয়র জুডিশিয়াল বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট মো. হায়দার আলীর আদালতে এ রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার আবেদন করা হয়।
মামলায় ১নং আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহম্মদ, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে.এম নুরুল হুদা, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক ডেপুটি এ্যার্টনি জেনারেল মো. আশিক উল হক।
অ্যাডভোকেট বারী ভূইয়া উল্লেখ্য করেন, ১-৭নং বিবাদীগন অনির্বাচিত হওয়ায় অবৈধভাবে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে/মন্ত্রী পদ অধিষ্ঠত হয়ে ও ৮-১০ নং বিবাদীগণ অবৈধ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হয়। ১১ নং বিবাদী সাবেক প্রধান বিচারপতি হয়ে এবং ১২নং বিবাদী অবৈধ ডেপুটি এ্যার্টনি জেনারেল নিযুক্ত হয়ে পরস্পর যোগসাজসে, প্রত্যক্ষ মদদে কুপরামর্শ এবং একই অভিপ্রায় বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করার জন্য কাজী রকিবুদ্দিন আহম্মদ ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসাবে নিয়োগ পেয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ শুরু করে এবং বিগত ২০১৪ সালে ৪ জানুয়ারি তারিখে ষড়যন্ত্রমূলক ভোটার বিহীন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এবং অধীনস্থদের উক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। কে.এম. নুরুল হুদা ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিয়োগ পেয়ে বিগত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ষড়যন্ত্রমূলক জালিয়াতিপূর্ণ বিনা ভোটের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এবং অধীনস্থদের উক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। কাজী হাবিবুল আউয়াল ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে নিয়োগ পেয়ে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটার বিহীন ড্যামি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এবং অধীনস্থদের উক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। সব অনিয়ম ও কারচুপিকে ছাড়িয়ে গেছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসামিগণ তাহাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে বাংলাদেশকে অন্য রাষ্ট্রের করদ রাজ্যে পরিণত করার জন্য এবং বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করার লক্ষ্যে গণতন্ত্র হত্যা চালিয়ে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হনন করে রাষ্ট্র যন্ত্র বিনষ্টের কারিগর হিসাবে কাজ করিয়া বিশ্বাস ভঙ্গ, তঞ্চকতা, জাল-জালিয়াতিপূর্ণ, রাষ্ট্রদ্রোহ/রাষ্ট্র ধ্বংসের মাধ্যমে ফৌজদারী অপরাধ করিয়াছে।
বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর আজ্ঞাবহ হয়ে ষড়যন্ত্র করে ভোটারবিহীন ড্যামি নির্বাচন করেছেন আসামিরা। তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছি। আদালত এই মর্মে মামলা হয়েছে কিনা এ বিষয়টি জানার সংশ্লিষ্ট থানাকে তলব করেছেন। সেই সাথে আগামী ৩ জুন শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির।