নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিনারুল হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার (৯ মে) সকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুদ্দিন কাদেরের আদালত এ নির্দেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে পৌনে ৬ টায় অনেক নাটকীর পরে শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত চুনকা কুটির থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে বহনকরা পুলিশের গাড়ি বহরে হামলা করে বিএনপি সমর্থিত এক দল লোক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খান বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের মিনারুল হত্যা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত মামলার শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৬ মে হবে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আইভীকে গ্রেফতার করতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশের একটি টিম দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত আইভীর বাসভবন চুনকা কুটিরে প্রবেশ করে। এই খবর শুনে চারদিক থেকে হাজার হাজার এলাকাবাসী তার বাড়ির সামনে এসে ভিড় করে। বাড়ির প্রধান ফটক অবরোধ করে তাকে গ্রেফতার না করার দাবিতে নানা স্লোগান দেয়। এসময় আইভীর বাড়ির প্রবেশ পথের দুই রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়। পরে জেলা পুলিশের এরেকটি টিম এসে আইভীর বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশকে চলে যেতে বলে। পরে তাদেরকে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে পুলিশের তিন সদস্যের টিম বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে আইভীর বাড়িতে চা-বিস্কুট আপ্যায়ন করা হয় পুলিশকে। তবে রাতে গ্রেফতারের বিষয়ে আপত্তি করে আইভী। একারণে তাকে ভোর সকাল পৌনে ছয়টায় গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পথিমধ্যে শহরের কালীরবাজার এলাকায় সাবেক মেয়র আইভীকে বহনকরা পুলিশের গাড়ি বহরে হামলা করে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান বলেন, সাবেক মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় হত্যাসহ ৫টি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে তাকে আদালতো তোলা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করার আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় সাবেক মেয়র আইভীকে ১২ নম্বর আসামি করা হয়।