নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, “১৬ বছরের ত্যাগ-তিতিক্ষার পর ৫ তারিখের পরে শেখ হাসিনা পালিয়েছে, এবং দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এর আগে দেশের অর্থনীতি, আইন-শৃঙ্খলা, শিক্ষা, মানুষের মৌলিক অধিকার এবং আইনের শাসনকে ধ্বংস করে দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এখন এসব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সময় এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৩ সালে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ৩১ দফা দিয়েছেন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা একাধিকবার নির্বাচন করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছেন। তাই জনগণের প্রত্যাশা—নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। তবে সামনে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে স্বৈরশাসকেরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।”
মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে ফতুল্লা থানা বিএনপির আয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি নতুন কোর্ট সংলগ্ন ফতুল্লা থানা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তব্যে গিয়াসউদ্দিন বলেন, “বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমাদের নেত্রী দেশের রাজনীতিতে সর্বশ্রেষ্ঠ অভিভাবক। ড. ইউনূস সরকারের সাথে ভুল বোঝাবুঝি না হয়—এমন আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন। আজ যারা লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে, তারা অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে, এবারও ব্যর্থ হবে।
তিনি শেখ হাসিনাকে “মিথ্যাবাদী ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী” আখ্যা দিয়ে বলেন, “তিনি অসভ্য নেতা এবং অসভ্য কর্মী তৈরি করেছেন। তাঁর সরকারের দোসরদের এই দেশের মাটিতেই শাস্তি দিতে হবে।”
নারায়ণগঞ্জের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তকী হত্যাসহ অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। প্রশাসন শুধু ‘জুলাই বিপ্লব’ নিয়ে তামাশা করছে। আজও চার্জশিট দিচ্ছে না। যারা নির্দোষ তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে, আর দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেই, খেলার মাঠ নেই। শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই। শহরের যানজট নিরসনের ব্যবস্থাও নিতে হবে। একক নেতৃত্বের পরিবর্তে সকল কমিটিকে একমঞ্চে আনতে হবে—যেখানে কোনো প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি থাকবে না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন – নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব,জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, এনায়েতনগর ইউনিয়নের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম মাহমুদুল হক আলমগীর, সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার মো. আক্তার হোসেন,কুতুবপুর ইউনিয়নের সভাপতি বিল্লাল হোসেন, ফতুল্লা ইউনিয়নের সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ, কাশিপুর ইউনিয়নের সভাপতি মঈনুল হোসেন রতন, ফতুল্লা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান মাসুদ,সাবেক প্রচার সম্পাদক সীমান্ত প্রধান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ, জেলা তাঁতীদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান উজ্জ্বলসহ আরও অনেক নেতাকর্মী।