শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জের আয়োজনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অংশীজনদের অংশগ্রহণে শহরের যানজট নিরসন ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকাল ৩টায় চাষাড়াস্থ বঙ্গবন্ধু সড়কে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নারী শ্রমিক, শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা ও যানজট নিরসন বিষয়ে আয়োজিত এই বিশেষ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক আলমগীর কুমকুম।
এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুজন মাহমুদ বলেন,
“সম্প্রতি দেওভোগ পোশাক প্রস্তুতকারক মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি কবির খান ও জাকির খানের অগ্রণী ভূমিকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
আমরা সবাই চাই একটি যানজটমুক্ত ও সুশৃঙ্খল নগরী। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। তারা সড়কে কোনো নির্দেশনা মানে না, যেখানে-সেখানে গাড়ি রেখে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে।
বড় গাড়িগুলো সাধারণত নির্ধারিত লাইনে চললেও হঠাৎ করে তাদের সামনে ছোট যানবাহন চলে আসে, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। প্রশাসনের দুর্বলতা ও বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের কারণে এসব সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অটোরিকশাচালকদের সামলাতে গেলে তারা মারমুখী হয়ে ওঠে।”
তিনি আরও বলেন,
“ট্রাকের মাধ্যমে খাদ্যসহ নানা প্রয়োজনীয় পণ্য এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সরবরাহ করা হয়, এটি অবশ্যই একটি মানবিক কাজ। আমরা নিতাইগঞ্জ এলাকাকে যানজটমুক্ত করেছি। আগে সেখানে অটোরিকশাগুলো মোড়, খাঁপুর হাসপাতাল, ডিসি অফিস ও ওই এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রাখত। ৫ আগস্টের পর এসব নিয়ম মানা হচ্ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা আবার লঙ্ঘন হচ্ছে।
বর্ষা ও ঈদ-রমজানের সময় সড়কে যেভাবে ড্রেনেজসহ অন্যান্য কাজ শুরু হয়, তাও যানজটের অন্যতম কারণ। এ অবস্থায় বাস বা ট্রাককে দায়ী করা ঠিক নয়। ফুটপাত দিয়ে চলবে মানুষ, না গাড়ি—এই বিষয়টিও এখন প্রশ্নবিদ্ধ।”
এসময় শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম শামীম বলেন,
“যানজট নিরসনে নিতাইগঞ্জে ১০টি মালিক সমিতি একত্রিত হয়ে কাজ করছে বলেই এলাকাটি এখন যানজটমুক্ত। আমরা ১২ জন যানজট নিয়ন্ত্রণ কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। শ্রমিকদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছি এবং কেউ আহত হলে ক্ষতিপূরণও প্রদান করা হয়।
আমরা আহ্বান জানাব, ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সাথে সমন্বয়ে বসুন। ৫ আগস্টের পর ট্রাফিক ব্যবস্থা ছিল না, যার সুযোগে অটোরিকশাচালকরা মনে করেছে স্বাধীন দেশে শহরে প্রবেশে তাদের বাধা নেই।”
সভায় আরও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন:
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা ভূঁইয়া, ডা. রিফাত জাবিন, সহকারী পরিচালক ইয়াসমিন আক্তার, মোস্তফা আজিজুল করিম (বিকেএমইএ পরিচালক), নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুজন মাহমুদ, সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম শামীম, যুগ্ম আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ সেলিম, বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম, আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, অনুপম হোসিয়ারী ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেড (ভুলতা), নিতাইগঞ্জ লোড-আনলোড লেবার ইউনিয়ন, হোলসিম-লাফার্জ সিমেন্ট লিমিটেড শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।