নারায়ণগঞ্জে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সমাজে ভালো মানুষের অবদান তুলে ধরার এবং অপরাধ দমনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার ওপর জোর দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নিজেই।
সভায় তিনি বলেন, “সমাজে অনেক ভালো মানুষ আছেন, কিন্তু আমরা তাদের কথা বলি না। ফলে অনেকেই মনে করেন ভালো কাজ করে কোনো সম্মান পাওয়া যায় না। যারা সৎ পথে থাকেন, তাঁদের যদি ‘বোকা’ বা ‘বেকুব’ বলা হয়, তাহলে ভালো কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “সমাজ শুধু কারও একার নয়, সবাইকে নিয়েই সমাজ। এই কথাটি আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। পাশাপাশি মাদক এখন সবচেয়ে বড় সামাজিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রশাসনের পাশাপাশি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে।”
সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার জানান, জেলায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ ২৪ ঘণ্টায় ৬৮টি টহল দল নিয়োজিত রেখেছে, কিন্তু অপরাধীরা বেশিরভাগই ভাসমান, যারা অপরাধ ঘটিয়ে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে।
রূপগঞ্জে সাম্প্রতিক গোলাগুলির বিষয়ে তিনি বলেন, “স্থানীয়ভাবে তথ্য পাচার হওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ বুঝে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তবে ডিবি পুলিশের টহল এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
আড়াইহাজার উপজেলায় ডাকাতির বিষয়ে তিনি বলেন, “রাতে সাতটি টহল দল কাজ করছে, পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যও মোতায়েন রয়েছে। কিছু এলাকায় সরাসরি যাতায়াত করা কঠিন হওয়ায় সেসব স্থানে ডাকাতির ঘটনা বেশি ঘটে।”
তিনি আরও জানান, “আড়াইহাজারের দু’টি ইউনিয়নে ডাকাতির প্রবণতা পারিবারিকভাবে চলে আসছে—যেখানে একাধিক প্রজন্ম একই অপরাধে জড়িত। তারা অত্যন্ত পেশাদার। জামিনে মুক্ত হয়ে আবার অপরাধে ফিরে যায়। বিভিন্ন জেলা থেকে এসে স্থানীয় সহযোগিতায় ডাকাতি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এই প্রবণতা বন্ধে নজরদারি বাড়ানো জরুরি।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন, ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাসার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাফর সাদিক চৌধুরী, সোনারগাঁ ইউএনও ফারজানা রহমান, আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা এবং জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জহিরুল ইসলামসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।