তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান দাবি করেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু “আঞ্চলিক শান্তির সবচেয়ে বড় বাধা” এবং ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলা আসন্ন পারমাণবিক আলোচনাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বানচাল করার জন্য করা হয়েছে।
শনিবার ইস্তাম্বুলে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (OIC) এক জরুরি বৈঠকে আরব দেশগুলোর কূটনীতিকদের উদ্দেশে বক্তব্যকালে এরদোয়ান বলেন, “ইসরায়েল কোনো সংকট কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান করতে চায় না। নেতানিয়াহু এবং তার সরকার এই অঞ্চলকে, এমনকি পুরো বিশ্বকে, এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
এরদোয়ান পশ্চিমা নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, তারা ইসরায়েলকে “নির্বিচারে সমর্থন” দিয়ে যাচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা রক্তের মাধ্যমে নতুন করে নির্ধারণ হতে দেবে না।
তিনি বলেন, “শুধু ফিলিস্তিন নয়, সিরিয়া, লেবানন এবং ইরানেও ইসরায়েলের দস্যুবৃত্তি বন্ধে আমাদের আরও ঐক্য প্রদর্শন করা জরুরি।”
৫৭টি মুসলিম দেশের জোট ওআইসি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার লক্ষ্য মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও সম্প্রীতির প্রচার। বর্তমানে তুরস্ক সংস্থাটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে এবং দেশটি নিজেদের পশ্চিম ও মুসলিম বিশ্বের সেতুবন্ধনকারী হিসেবে দেখছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদক সিনেম কোসেউগ্লু জানান, তুরস্কের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান, ন্যাটো সদস্যপদ এবং ইরান, পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক — এসবের কারণে তারা মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালনে সক্ষম হতে পারে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, “ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়ে পুরো অঞ্চলকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের কোনো ফিলিস্তিনি, লেবাননি বা ইরানি সমস্যা নেই — সমস্যা হচ্ছে স্পষ্টভাবে ইসরায়েল।”
এদিকে শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “আগ্রাসন বন্ধ হলেই কেবল আমরা আবার কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করতে পারি এবং অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারি।”
আরাগচি আরও জানান, ইরান ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার ধারাবাহিকতা চায় এবং শিগগিরই ফের আলোচনায় বসার আগ্রহ রাখে।
তথ্যসূত্র – আল জাজিরা ও News Agencies