মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে। ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলের টানা আক্রমণের মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নিজের নিরাপত্তা এবং দেশের নেতৃত্ব কাঠামো রক্ষায় ‘অসাধারণ একটি ধাপে’ এগিয়েছেন বলে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস–এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খামেনি তিনজন শীর্ষস্থানীয় শিয়া ধর্মীয় নেতার নাম সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেছেন, যা বর্তমান সংকটকালীন পরিস্থিতিতে একটি বিরল এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, এক সময় আলোচিত তার পুত্র মোজতবা খামেনির নাম এই তালিকায় নেই।
The New York Times-এর প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, খামেনি বর্তমানে নিরাপত্তাজনিত কারণে একটি ‘গভীর সুরক্ষিত বাঙ্কারে’ অবস্থান করছেন। তাকে হত্যার হুমকি রয়েছে বলে ধারণা করে তিনি ইলেকট্রনিক যোগাযোগ স্থগিত করেছেন এবং শুধুমাত্র একজন ‘বিশ্বস্ত সহকারীর’ মাধ্যমে সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তিনজন ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা, যারা যুদ্ধকালীন জরুরি পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সামরিক কমান্ডার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যাতে তথ্য ফাঁস রোধ করা যায়।
প্রসঙ্গত, ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের ভেতরে সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ধারাবাহিক বিমান হামলা শুরু করে। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন পর্যন্ত ইরানে চালানো হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, Anadolu Agency–র বরাতে জানা যায়, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব হামলায় ইরানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৩০ জন এবং আহত হয়েছেন ৩,৫০০ জনেরও বেশি, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
The New York Times-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে ইরান সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেনি।