নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার শহিদনগর এলাকায় একটি খানকা শরীফ নির্মাণকে কেন্দ্র করে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, প্রাণনাশের হুমকি এবং মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী সাইদ হাসান মুন্না নামে এক যুবক গত ২৮ জুলাই সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে খানকা শরীফ নির্মাণের কাজ শুরু করলে নাছির (৪৫), শরীফ (৪০) এবং সালাউদ্দিন ওরফে সালাউদ্দিন কসাই (৩৮) নামক তিন ব্যক্তি তার নিকট ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত নাছির ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন এবং শরীফ ও সালাউদ্দিন স্থানীয় বিএনপি কর্মী। তারা রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। টাকা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হুমকি দেওয়া হয়।
সাইদ হাসান মুন্না জানান, ২৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হলে অভিযুক্তরা তাকে মারধরের উদ্দেশ্যে ঘিরে ধরে এবং জোর করে তার কাছে মাদক রেখে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে আশপাশের স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
পরবর্তীতে ২৫ জুলাই সকাল ৯টার দিকে তারা তাকে জোর করে বাসা থেকে তুলে নিয়ে মাঠে নিয়ে যান এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। তারা সাফ জানিয়ে দেন, তাকে খানকা শরীফের কাজ করতে দেওয়া হবে না।
ভুক্তভোগী সাইদ হাসান মুন্না বলেন,
“আমি একজন সাধারণ মানুষ। এলাকার শান্তি ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখতে খানকার কাজ শুরু করেছি। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি আমার কাজে বাধা দিচ্ছে, চাঁদা চাচ্ছে, প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
বর্তমানে সাইদ হাসান মুন্না ও তার পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
শহিদনগর এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“খানকা শরীফ হচ্ছে একটি পবিত্র স্থান। এটা নির্মাণে বাধা দেওয়া এবং চাঁদা চাওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ। বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন এবং পূর্বেও এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত নাসির একজন মাদকাসক্ত ব্যাক্তি হিসেবে এলাকায় পরিচিত এবং মামলা বানিজ্যের সাথে যুক্ত বলে জানা যায়।