জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেছেন, কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়াকে অনির্বাচিত পরিসরে নিতে চায়, যার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াকে অযথা জটিল করে তোলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র সরাসরি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে থাকা উচিত। এ বিষয়ে উচ্চকক্ষের কোনো ভূমিকাই থাকা উচিত নয়। কিন্তু কেউ কেউ পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির নামে এই ক্ষমতা অন্যত্র সরিয়ে নিতে চাইছে।”
তিনি জানান, উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব বিএনপির পক্ষ থেকেই এসেছে, যা তাদের ৩১ দফা প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। “জাতীয় পর্যায়ের অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সমৃদ্ধ উচ্চকক্ষ গঠনের প্রয়োজনীয়তা আমরা আগেই তুলে ধরেছি। তবে সংবিধান সংশোধন শুধু নিম্নকক্ষেই হবে।”
বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি ও কাঠামো শক্তিশালী করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন। কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও ন্যায়পালের মতো প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিএনপি একমত হয়েছে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫৬ শতাংশ কোটাব্যবস্থা এবং ভাইভা পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বরের সুযোগ পিএসসিতে দুর্নীতির মূল কারণ। এসব ব্যবস্থার সংস্কার অপরিহার্য।” এ সময় তিনি চাকরির বয়সসীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন।
জাতীয় সনদের খসড়া সংক্রান্ত আলোচনায় সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, কয়েকটি শব্দ ও ধারা সংশোধনের পাশাপাশি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’কে সংবিধানের চতুর্থ তফসিল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রে প্রধান উপদেষ্টাসহ সকল রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর থাকবে, যা নথিটির সর্বজনীনতা ও বৈধতাকে আরও জোরদার করবে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ—উভয় কক্ষের সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট দেবেন, এবং এ বিষয়ে উপস্থিত সবাই একমত হয়েছেন।