নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি লেকে মো. ইয়াছিন (১৭) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের দুই দিন পর বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী সিআইখোলা এলাকায় ডিএনডি লেকে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে রাতে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেন পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসক বলছেন, নিহতের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত ইয়াছিন কাঁচপুরের স্থানীয় মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তার বাবা সৌদি প্রবাসী। শহরে পড়াশোনার সুবিধার জন্য মা আফরিনা নাসরিন তিন সন্তানকে নিয়ে চাষাড়ায় ভাড়াবাসায় থাকতেন। ইয়াছিন বেইজ স্কুলে পড়াশোনা করতো এবং জুলাইয়ে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৪.৬২ অর্জন করেছিল।
জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে চাষাড়ার বাসা থেকে বের হওয়া ইয়াছিন আর বাড়ি ফেরেনি। নিখোঁজ হওয়ার দিন ইয়াছিন হাতে মাত্র ৫০ টাকা নিয়ে ওষুধ কিনতে বের হয়েছিল। মামাতো ভাই মুনতাসির রহমান জিহাদ জানান, “বাসার পাশে অনেকগুলো ফার্মেসি আছে, ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না। কিন্তু সময় অতিবাহিত হলেও বাড়ি ফেরেনি। মোবাইলে ফোন কল দিলেও রিসিভ করেনি। রাত দুইটা পর্যন্ত ফোন সচল ছিল।”
সন্তানকে না পেয়ে রাতেই মা আফরিন সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। নিহতের মামা মনসুর রহমান বলেন, “রাগ করে এর আগেও বাসা থেকে বের হতো ইয়াছিন। কিন্তু কি কারণে লাশ বাসা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে লেকে পাওয়া গেল, তা আমরা বুঝতে পারছি না। তিনি ছেলের মৃত্যুকে হত্যার আশঙ্কা ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।”
ময়নাতদন্তের বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক হায়দার আলী শিমুল জানান, “নিহতের মাথা ও বুকে আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে মারা গেলে পেটে যে পানি পাওয়া যায়, তা এখানে নেই। এটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।”
ঘটনাটি তদন্ত করছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী সওদাগর। তিনি জানান, “মরদেহ উদ্ধারের পর অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহের সঙ্গে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। মরদেহের অবস্থা অনুযায়ী অন্তত ২৪ ঘণ্টা এটি পানিতে ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা গুরুত্বসহকারে ঘটনার তদন্ত করছি। হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।”