নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বৃদ্ধা শারুনী বেগম হত্যার রহস্য মাত্র তিন দিনের মধ্যেই উদঘাটন করেছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক কিশোরকে (১৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর টেক্সটাইলের শ্রমিকদের থাকার একটি একতলা ভবনের ছাদে খাবারের মেসের দায়িত্বে থাকা শারুনী বেগম (৭৫)-এর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি মৃত মোক্তার হোসেনের স্ত্রী এবং তিনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, পিপিএম (বার)-এর নির্দেশে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আড়াইহাজার থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষে মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি বটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়।
ঘটনার পর থেকেই সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মো. মেহেদী ইসলাম-এর নেতৃত্বে আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার নাসির উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফ ও তদন্তকারী কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করে।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ১০ মিনিটে দুপ্তারা এলাকা থেকে হত্যার মূল আসামি হিসেবে জড়িত কিশোর শাওন (১৬), পিতা: আবুল কালাম, গ্রাম: পানান, ইউপি: জাইট্যা, থানা: ঈশ্বরগঞ্জ-কে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাওন জানায়, প্রায় ২০–২৫ দিন আগে টাকা চুরি করতে গিয়ে শারুনী বেগম তাকে হাতেনাতে ধরে মারধর করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দিন দুপুরে শাওন মেস ভবনের পেছন দিয়ে ছাদে উঠে আত্মগোপনে থাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শারুনী বেগম ছাদে উঠলে সে পিছন থেকে ঝাপটে ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং নাক-মুখ চেপে ধরে। শারুনী বেগম অচেতন হয়ে পড়লে রান্নাঘর থেকে বটি এনে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পরে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে শাওন হত্যার দায় স্বীকার করে।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, “তিন দিনের মধ্যে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃত কিশোর হত্যার দায় স্বীকার করেছে।”
গ্রেপ্তারকৃত শাওনকে সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।