নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীর্ষ সন্ত্রাসী সাহেব আলীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাতে গিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর সদস্যরা হামলার শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে আটি ওয়াপদা কলোনি বউ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় র্যাবের তিন সদস্য এবং স্থানীয় এক বাসিন্দা আহত হয়েছেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, হত্যা ও ডাকাতির মতো নানা অপরাধে জড়িত সাহেব আলীকে (৩৮) ধরতে অভিযান চালানো হয়। তিনি ওই এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১১ এর একটি গোয়েন্দা টিম তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওয়াপদা কলোনির একটি চায়ের দোকানে সাহেব আলীকে দেখা যায়। তখন সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যরা নজরদারি শুরু করলে সাহেব আলীর সহযোগীরা বিষয়টি টের পেয়ে যায় এবং অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি সাহেব আলী ও তার সহযোগী শীতলের চা দোকানে বসে আছে। হঠাৎ ৮-১০ জন লোক এসে র্যাব সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায় এবং ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।”
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি এসে দেখি একজন র্যাব সদস্য রক্তাক্ত অবস্থায় ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার মাথা ফেটে রক্ত ঝরছিল।”
স্থানীয় ফার্মেসি কর্মী শাহাদাত হোসেন জানান, “সাদা পোশাকে থাকা চারজন আহত সদস্য আমাদের দোকানে চিকিৎসা নিয়েছেন। একজনের মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল, দুজনের হাতে জখম হয়।”
র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার মো. নাঈম উল হক বলেন,
“গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি সাহেব আলী এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুটি গোয়েন্দা টিম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীরা বিষয়টি টের পেয়ে আমাদের সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে। এতে আমাদের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সাহেব আলীকে গ্রেফতারের জন্য পরিকল্পিতভাবে অভিযান চালাচ্ছিলাম। কিন্তু তার সহযোগীদের আগাম হামলার কারণে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।”
ঘটনার পর ওয়াপদা কলোনি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, সাহেব আলী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। র্যাবের অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
র্যাব জানিয়েছে, সাহেব আলীকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি তার সহযোগীদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।